ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের উত্তাপ ফের জ্বলে উঠছে আজ রাতে। লা লিগা ও ইতালিয়ান সিরি আ দুই লিগেই রয়েছে একটি করে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এসে প্রতিটি ম্যাচেই জমে উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থাকার সংগ্রাম এবং নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার লড়াই। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা দুই ভিন্ন স্বাদের দুই ম্যাচ লা লিগায় হেতাফে-এলচে, আর সিরি আ’তে কোমো-সাসসুয়োলো।

লা লিগার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে হেতাফের মাঠে, যেখানে স্বাগতিক দল নিজেদের মধ্যমসারির অবস্থান শক্তিশালী করতে নামবে। অন্যদিকে এলচে সংগ্রাম করছে টিকে থাকার জন্য; তাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই এখন যেন ছোঁয়া-ছোঁয়া চ্যালেঞ্জ। দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও রয়েছে অস্থিরতা। হেতাফে নিজেদের মাঠে সাধারণত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে থাকে, তবে এলচের রক্ষণভাগ মাঝে মধ্যেই দৃঢ়তা দেখিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আজকের ম্যাচে চমকও দেখা যেতে পারে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিগিন অ্যাপ, রাত ২টা থেকে।

অন্যদিকে ইতালিয়ান সিরি আ’তে কোমো ও সাসসুয়োলোর লড়াইও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহ্যবাহী সাসসুয়োলো এ মৌসুমে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছে, বিপরীতে কোমো তাঁদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে উন্নতির ছাপ রাখার চেষ্টা করছে। যারা টেকনিক্যাল ফুটবল ও দ্রুত পাল্টা আক্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য এ ম্যাচটি হতে পারে মনোমুগ্ধকর। সাসসুয়োলোর আক্রমণভাগ বিপজ্জনক হলেও রক্ষণভাগে ফাঁকফোকর বেশ। কোমো সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচের রং পাল্টে যেতে পারে যে কোনো মুহূর্তে। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে ডিএজেডএন–এ, রাত ১টা ৪৫ মিনিটে।

বিপিএল নিলামে বড় ধরনের চমক দেখা গেছে। দেশের ক্রিকেটের দুই অন্যতম অভিজ্ঞ তারকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম প্রথম রাউন্ডেই অবিক্রীত থেকে গেছেন। রোববার ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নিলামে এই দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের প্রতি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই আগ্রহ দেখায়নি। একজন অভিজ্ঞ ফিনিশার এবং অন্যজন দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য উইকেটকিপার ব্যাটার হওয়ার পরও প্রথম ডাকে দল পাননি তাঁরা।

নিলামের বি ক্যাটাগরিতে প্রথম নাম ওঠে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। তাঁর ভিত্তিমূল্য ছিল ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু বিড শুরু হলেও উপস্থিত ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজির কেউই তাঁর জন্য হাত তুলতে রাজি হয়নি। ঠিক একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিমও। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং বড় ম্যাচে পারফর্ম করার ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও এবার দলগুলোর মন গলাতে পারেননি তাঁরা।

সিনিয়ররা অবিক্রীত থাকলেও এ ক্যাটাগরির নিলামে মোহাম্মদ নাঈমকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকার বড় অঙ্কে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। অন্যদিকে লিটন দাসকে ৭৫ লাখ টাকায় দলে টেনেছে রংপুর রাইডার্স। কিন্তু সব আলোচনা ছাপিয়ে কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে দুই সিনিয়র তারকার অবিক্রীত থাকার বিষয়টি।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়েছে অবিক্রীত ক্রিকেটারদের পরে আবার নিলামে তোলা হবে। তবে দ্বিতীয়বার তাঁরা উঠবেন সি ক্যাটাগরিতে এবং সেক্ষেত্রে তাঁদের ভিত্তিমূল্যও কমে আসবে। ধারণা করা হচ্ছে সেটিই হয়তো শেষ সুযোগ হতে পারে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের জন্য। ফরম্যাট ও কৌশলগত পরিকল্পনার কারণে দলগুলো অভিজ্ঞদের পেছনে বিনিয়োগে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে নাকি সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স গ্রাফই এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে তা নিয়ে ক্রিকেট মহলে এখন জোর আলোচনা চলছে। তবে স্পষ্ট বিষয় হলো অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে পুনরায় নিলামে তাঁদের প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মনোভাবের ওপর।

প্রায় এক যুগ পর আবারও নিলাম পদ্ধতিতে ফিরেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বা বিপিএল। প্রথম দুই আসরে নিলাম হলেও পরে দীর্ঘদিন ধরে ড্রাফট পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়েছিল। এবার নিলাম পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার পর থেকেই সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

রোববার ৩০ নভেম্বর বিকেল ৪টার কিছু সময় পর শুরু হয় এবারের বিপিএল নিলাম। শুরুতে বিকেল ৩টায় নিলাম শুরু করার ঘোষণা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সময় পরিবর্তন করে তা পিছিয়ে বিকেল ৪টা করা হয়। যদিও নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান শুরু করতে পারেনি আয়োজকরা।

নিলামের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দল সর্বোচ্চ ২২ জন খেলোয়াড় দলে নিতে পারবে। ম্যাচের একাদশে ন্যূনতম দুইজন এবং সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে দলগুলো। এ ছাড়া প্রতিটি দলে সর্বোচ্চ ১২ জন সাপোর্ট স্টাফ অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

প্রতিটি দলকে নিলাম থেকে কমপক্ষে ১২ জন স্থানীয় ক্রিকেটার কিনতে হবে এবং সর্বোচ্চ ১৪ জন কেনা যাবে। প্রতিটি ক্যাটাগরি থেকে খেলোয়াড় কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যেমন এ ও বি ক্যাটাগরি মিলিয়ে কমপক্ষে দুজন এবং সি ও ডি ক্যাটাগরি মিলিয়ে কমপক্ষে ৬ জন খেলোয়াড় নিতে হবে। এছাড়া ই ও এফ ক্যাটাগরি মিলিয়ে কমপক্ষে ৪ জন খেলোয়াড় কিনতে হবে। নিলাম থেকে বিদেশি কিনতে হবে কমপক্ষে দুজন করে।

এবারের বিপিএলের নিলাম সরাসরি দেখাচ্ছে টি স্পোর্টস। এ ছাড়া মোবাইলেও নিলাম দেখার সুযোগ রয়েছে। বিসিবির ইউটিউব চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে এই নিলাম। ফলে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ক্রিকেটপ্রেমীরা এই নিলাম উপভোগ করতে পারছেন।

সামনেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বা বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও বিদেশি ক্রিকেটারদের দীর্ঘ তালিকা রয়েছে তবে এবারের ড্রাফটে এমন কিছু বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন যারা দামে কম হলেও মানে দুর্দান্ত। বিশেষ করে বি সি ডি এবং ই ক্যাটাগরিতে এমন কিছু নাম উঠে এসেছে যারা বাংলাদেশের কন্ডিশনে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কি বড় নামের পেছনে ছুটবে নাকি এই কার্যকরী ও সাশ্রয়ী ক্রিকেটারদের দিকে নজর দেবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বি ক্যাটাগরিতে বেশ কিছু কার্যকরী খেলোয়াড় রয়েছেন। নেপালের লেগ স্পিনার সন্দীপ লামিচানে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এবং বাংলাদেশের স্পিন সহায়ক উইকেটে তিনি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। জিম্বাবুয়ের পেসার রিচার্ড এনগারাভা আগেও বিপিএলে সিলেটের হয়ে ভালো পারফর্ম করেছেন। এছাড়া আয়ারল্যান্ডের হ্যারি টেক্টর এবং যুক্তরাষ্ট্রের পেসার আলী খানও এই ক্যাটাগরিতে রয়েছেন যারা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। তবে এই ক্যাটাগরিতে সামিত প্যাটেল রবি বোপারা বা ইসুরু উদানার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররাও আছেন।

সি ও ডি ক্যাটাগরিতে অলরাউন্ডার ও লেগ স্পিনারের খোঁজে থাকবে দলগুলো। সি ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারন জোন্স এবং আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার ও পল স্টার্লিংয়ের নাম উল্লেখযোগ্য। পল স্টার্লিং কম দামে একজন বিস্ফোরক ওপেনার হিসেবে দলের জন্য দারুণ সংযোজন হতে পারেন। এছাড়া রায়ান বার্লের মতো কার্যকরী অলরাউন্ডারও আছেন এই তালিকায়। ডি ক্যাটাগরিতে পাকিস্তানের লেগ স্পিনার উসমান কাদির এবং জিম্বাবুয়ের ব্রায়ান বেনেটের দিকে নজর থাকতে পারে দলগুলোর। উসমান কাদিরের বিপিএল খেলার অভিজ্ঞতা এবং চার ওভারের কোটা পূরণ করার দক্ষতা তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।

সবচেয়ে বড় চমক থাকতে পারে ই ক্যাটাগরিতে অর্থাৎ ১০ থেকে ১৫ হাজার ডলারের বেস প্রাইসে। এখানে নেপালের ক্রিকেটাররা চমক দেখাতে পারেন। দীপেন্দ্র সিং আইরি আসিফ শেখ এবং সোমপাল কামি তিনজনই নেপালের হয়ে নিয়মিত পারফর্ম করছেন। দীপেন্দ্র সিং আইরি ব্যাট হাতে এবং ফিল্ডিংয়ে দারুণ যা টি টোয়েন্টি ফরম্যাটের জন্য আদর্শ। এছাড়া সোমপাল কামি একজন কার্যকরী অলরাউন্ডার।

অবশ্য এ ক্যাটাগরিতে বড় তারকারা রয়েছেন। মাহেশ থিকশানা মাথিশা পাথিরানা দাসুন শানাকা ও চারিত আসালাঙ্কার মতো বড় নামগুলো এই তালিকায় আছে। বিশেষ করে মাহেশ থিকশানা এবং মাথিশা পাথিরানা আইপিএলে নিয়মিত মুখ এবং টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের চাহিদা তুঙ্গে। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমও এই তালিকায় আছেন যিনি গতি দিয়ে ব্যাটারদের পরাস্ত করতে পারেন। বিপিএলের ড্রাফটে প্রায় ২৫০ এর বেশি বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যদি নামের চেয়ে পারফরম্যান্স ও কন্ডিশন বিবেচনায় দল গঠন করে তবে কম দামি ক্রিকেটাররাই হতে পারেন টুর্নামেন্টের গেম চেঞ্জার।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বা বিপিএলের চিরাচরিত প্লেয়ার্স ড্রাফট বা লটারির দিন শেষ হয়েছে। ভাগ্যের ওপর নির্ভর না করে এবার মেধা কৌশল আর অর্থের ঝনঝনানি দিয়ে দল গোছানোর সুযোগ পাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। দীর্ঘ বিরতির পর বিপিএলের ১২তম আসরে ফিরছে প্লেয়ার্স অকশন বা খেলোয়াড় নিলাম। বিপিএলে নিলাম পরিচালনা করবেন রাফে নিজাম যিনি এর আগেও বিপিএলে কাজ করেছেন।

আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর হোটেল র‍্যাডিসনে অনুষ্ঠিত হবে এই নিলাম। এবারের আসরে অংশ নেওয়া ৬টি ফ্র্যাঞ্চাইজি টেবিলে বসবে তাদের পছন্দের ক্রিকেটারদের দলে ভেড়াতে। দলগুলো হলো ঢাকা ক্যাপিটালস সিলেট টাইটান্স রংপুর রাইডার্স নোয়াখালী এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম রয়্যালস ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। বিসিবির চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী আজকের নিলামে ১৪৭ জন স্থানীয় এবং ২৬০ জন বিদেশি ক্রিকেটার উঠবেন।

স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য এ থেকে এফ পর্যন্ত মোট ৬টি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ এ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা। এরপর যথাক্রমে ৩৫ লাখ ২২ লাখ ১৮ লাখ ১৪ লাখ ও ১১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের জন্য এ থেকে ই পর্যন্ত ৫টি ক্যাটাগরি থাকছে। সর্বোচ্চ এ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৩৫ হাজার ডলার বা প্রায় ৪২ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ই ক্যাটাগরির মূল্য ১০ হাজার ডলার।

নিলামে স্থানীয় এ ক্যাটাগরির খেলোয়াড়দের জন্য প্রতি ডাকে দাম বাড়বে ৫ লাখ টাকা করে। বি ক্যাটাগরিতে ৩ লাখ সি ক্যাটাগরিতে ১ লাখ এবং বাকিগুলোতে ৫০ হাজার টাকা করে দাম বাড়বে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে ক্যাটাগরিভেদে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাম হাঁকানো যাবে। প্রতিটি দলকে নিলাম থেকে অন্তত ১২ জন স্থানীয় এবং ২ জন বিদেশি ক্রিকেটার কিনতেই হবে। সরাসরি চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় বাদে নিলামে স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য একটি দল সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ করতে পারবে এবং বিদেশিদের ক্ষেত্রে বাজেট ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

নিলামের আগেই দলগুলো সরাসরি চুক্তিতে বেশ কিছু তারকাকে নিশ্চিত করেছে। তাসকিন আহমেদ ও সাইফ হাসান খেলবেন ঢাকা ক্যাপিটালসে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদকে নিয়েছে সিলেট টাইটান্স। মুস্তাফিজুর রহমান ও নুরুল হাসান সোহান আছেন রংপুর রাইডার্সে। এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ও তানজিদ তামিম রাজশাহীতে হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকার নোয়াখালীতে এবং শেখ মেহেদী ও তানভীর ইসলাম খেলবেন চট্টগ্রামের হয়ে। বিদেশিদের মধ্যে অ্যালেক্স হেলস মোহাম্মদ আমির ও কুশল মেন্ডিসের মতো তারকারাও দল পেয়ে গেছেন।

ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতা এড়াতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিসিবি। নিয়ম করা হয়েছে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ক্রিকেটাররা ২৫ শতাংশ টাকা পাবেন। ফাইনালের আগে আরও ৫০ শতাংশ এবং টুর্নামেন্ট শেষের ৩০ দিনের মধ্যে বাকি ২৫ শতাংশ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

ফিক্সিং সন্দেহে রেড ফ্লাগে থাকা ক্রিকেটারদের নাম বিপিএলের নিলাম থেকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি এবং নতুন প্রকাশিত তালিকায় তাদের নাম স্থান পায়নি। নাম সরিয়ে দেওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় দলের পরিচিত মুখ এনামুল হক বিজয়ও তবে নিজের নামে ওঠা এমন গুরুতর অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ তিনি। বিজয় দাবি করেন নিলাম থেকে বাদ দিয়ে তাঁকে অসম্মানিত করেছে বিসিবি এবং একই সঙ্গে তিনি বোর্ডের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজয় বলেন যদি প্রমাণ করতে না পারে তবে এই যে আমি অসম্মানিত হচ্ছি এটার ব্যাখ্যা কে দেবে তা বিসিবিকে প্রশ্ন করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন প্রমাণ দেখান কারণ আমরা কি যা তা প্লেয়ার। তিনি আক্ষেপ করে বলেন এতদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে খেলছি অথচ এতটুকু সম্মান নেই।

বিজয়ের অভিযোগের তালিকায় রয়েছে ক্যাটাগরি অবনমন প্রসঙ্গও। তিনি বলেন আমাকে ক্যাটাগরি বি থেকে সিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে যা ছিল অসম্মানের। সেখান থেকে এখন বিপিএলের নিলাম থেকেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে যা মেনে নেওয়া কঠিন। তিনি মন্তব্য করেন এতে বোঝা যাচ্ছে আমি দোষী তাই আমাকে প্রমাণ দেখান। তিনি প্রশ্ন রাখেন যদি প্রমাণ না দেখাতে পারেন যে অসম্মানিত করছেন এটার ব্যাখ্যা কে দেবে এবং এটার বিচার কে করবে।

সূত্র: বিডি ক্রিকটাইম

দলের চিকিৎসকের কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে সেটি উপেক্ষা করেই দলের প্রয়োজনে মাঠে নামলেন নেইমার এবং খেললেন পুরো ৯০ মিনিট। চোটাক্রান্ত নেইমারকে এদিন মাঠে থামাতে পারেননি কেউ। নিজে গোল করার পাশাপাশি সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছেন এবং তাঁর দল সান্তোস ৩-০ গোলে হারিয়েছে স্পোর্তকে। এই জয়ের ফলে সান্তোস অবনমন অঞ্চল থেকে নিজেদের ওপরে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে।

গত ২০ নভেম্বর বাঁ পায়ের হাঁটুতে মেনিস্কাস ইনজুরিতে পড়েন ৩৩ বছর বয়সী নেইমার। অস্ত্রোপচার শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে গেলে তাঁর মৌসুম শেষ হয়ে যেত। তবে এবার বড় ঝুঁকি নিয়েই মাঠে নামেন নেইমার। সান্তোসের মেডিকেল দল নেইমারের খেলার বিপক্ষে থাকলেও তিনি তাঁদের কথা শোনেননি। ইনজুরি নিয়েই স্পোর্ত শিবিরে ভীতি ছড়ান তিনি। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে দলকে লিড এনে দেন এই তারকা ফুটবলার। বক্সে গিলহের্মের পাস পেয়ে চার ডিফেন্ডারের বাধা অতিক্রম করে তিনি গোল আদায় করে নেন।

ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে স্পোর্ত নিজেদের ভুলেই দ্বিতীয় গোল হজম করে। গোলমুখে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়ান লুকাস কাল। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণে আধিপত্য বজায় রাখে সান্তোস। ৬৭তম মিনিটে গিয়ে তারা তৃতীয় সাফল্যের দেখা পায়। বাঁ কর্নার থেকে নেইমারের ক্রস ছয় গজ দূরত্বে পেয়ে হেডের সাহায্যে জালে জড়ান জোয়াও শমিদ। ৯০তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন নেইমার তবে ততক্ষণে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে জয় নিশ্চিত করে নেয় সান্তোস। যোগ করা ৬ মিনিটে কোনো ব্যবধান গড়তে পারেনি স্পোর্ত এবং সান্তোসও আর কোনো গোলের দেখা পায়নি।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বা বিপিএলকে সামনে রেখে দলগুলো নিজেদের প্রস্তুতি এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছে। আসন্ন বিপিএলে নবাগত দল সিলেট টাইটান্সও দল গোছানোর কাজ জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। এবার পাকিস্তানের তারকা ব্যাটারের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করেছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

আসন্ন আসরে সিলেট টাইটান্সের হয়ে মাঠ মাতাবেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার সাইম আইয়ুব। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সিলেট টাইটান্স কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে বিপিএলের পুরো আসরেই সাইমকে পাবে সিলেট যা দলের জন্য বড় সুখবর। ২৩ বছর বয়সী এই পাকিস্তানি ব্যাটিং অলরাউন্ডার এর আগেও বিপিএলে তিনটি ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছিলেন। তিনি দুর্দান্ত ঢাকা ঢাকা ক্যাপিটালস ও রংপুর রাইডার্সের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের কন্ডিশন সম্পর্কে তাঁর ভালো ধারণা রয়েছে।

দেশের জার্সিতে সাইম এখন পর্যন্ত ৫৪টি টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এবং ১৩৩ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন ১০১৬। এ ছাড়া দলের প্রয়োজনে বল হাতেও উইকেট এনে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর। এখন পর্যন্ত সাইম আইয়ুবের আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ১৯টি যা টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কার্যকরী।

বিপিএলের এবারের আসরে অংশ নেবে ৬টি দল। এর আগে বিসিবি পাঁচ দলের বিপিএলের বিষয়টি চূড়ান্ত করলেও পরবর্তীতে এসে যুক্ত হয়েছে নোয়াখালী। এবারের বিপিএলে অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো রংপুর রাইডার্স ঢাকা ক্যাপিটালস সিলেট টাইটান্স চট্টগ্রাম রয়্যালস রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস।

বিপিএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ হলো অবশেষে। বহুদিন ধরে ধুঁকতে থাকা প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার ভেতর অপেক্ষায় ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটার এবং সমর্থকেরা। সেই অপেক্ষার ইতি ঘটিয়ে আসরের সূচি নিলাম তারিখ থেকে শুরু করে দলসংখ্যা সবকিছু একসঙ্গে পরিষ্কার করে দিল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বা বিপিএলের ১২তম আসর মাঠে গড়াচ্ছে ১৯ ডিসেম্বর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় এবং শিরোপা লড়াইয়ের ফাইনাল নির্ধারিত হয়েছে ১৬ জানুয়ারি। বিপিএলে দল পেতে হলে মোটা অঙ্কের ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিষ্ঠানকে। ১০ কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা এখনো পুরোপুরি পায়নি বোর্ড। অন্তত চারটি দল অধিকাংশ দিয়ে দিলেও অন্যদের থেকে এখনো সেভাবে সাড়া মেলেনি এবং এর মধ্যে আছে নতুন করে দল পাওয়া নোয়াখালী এক্সপ্রেসও।

কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি চালাবে বিসিবি এমনটিই জানিয়েছেন গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেন যদি টাকা না দেয় ক্রিকেট বোর্ড তৈরি আছে ফ্র্যাঞ্চাইজি চালানোর জন্য। এটা একটা ব্যাকআপ অপশন আমরা রেখেছি। আমরা সবাই চাই এবারের টুর্নামেন্টটা একটা স্বচ্ছ রাখতে। এমনকি টুর্নামেন্টের মধ্যেও যদি এমন কিছু দেখি আমরা তখনো দল চালাব।

ড্রাফটের আগে পুরোপুরি অর্থ বুঝে না পেলে দল দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। প্রয়োজনে ওই দলকে বিসিবিকেই নিজের আওতায় নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধে আগের টুর্নামেন্টে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে যাদের নামে তথ্য পেয়েছে বোর্ড তাদের কোনো দলের সঙ্গে থাকতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের টপ অফ দ্য টেবিল লড়াইয়ে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়ে বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল। বুধবার রাতে এমিরেটস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামা ননি মাদুয়েকে ও গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির গোলেই জয়ের পথ সুগম হয় গানার্সদের।

ম্যাচের ২২তম মিনিটে আর্সেনালকে প্রথমে এগিয়ে দেন জুরিয়েন টিম্বার। বুকায়ো সাকার কর্নার থেকে তাঁর নিখুঁত হেডে লিড পায় স্বাগতিকরা। তবে দীর্ঘক্ষণ এই লিড ধরে রাখতে পারেনি মিকেল আর্তেতার দল। যশুয়া কিমিখের দুর্দান্ত ক্রস ফিল্ড পাস থেকে কিশোর লেনার্ট কার্লের জোরালো শটে সমতায় ফেরে বায়ার্ন মিউনিখ। প্রথমার্ধ ছিল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তবে বিরতির পর পুরো চিত্রই বদলে যায়।

আর্সেনালের বদলি খেলোয়াড়রাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠেন। রিকার্ডো কালাফিওরির চমৎকার ডেলিভারিতে বক্সে ঢুকে মাদুয়েকে গোল করে দলকে আবারও এগিয়ে নেন। এরপর ম্যাচের সবচেয়ে বড় ভুলটি করেন বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার। তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে ডি বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। এই সুযোগটি দারুণভাবে লুফে নেন মার্টিনেল্লি এবং নয়্যারকে কাটিয়ে খালি পোস্টে গোল করে আর্সেনালের ৩-১ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন।

এই জয়ে পাঁচ ম্যাচে পাঁচ জয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান মজবুত করেছে মিকেল আর্তেতার দল। অন্যদিকে মৌসুমের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ পেল জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ।