গাজায় রক্তের বন্যার মধ্যেই ‘যুদ্ধবিরতির’ ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলা শিগগিরই থামতে পারে—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নেদারল্যান্ডসের হেগে আয়োজিত ন্যাটো সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ পরিস্থিতির অনেক অগ্রগতি হয়েছে।” মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের বরাতে ট্রাম্প জানান, খুব দ্রুতই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসতে পারে। তার এই মন্তব্যের সূত্র দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

তবে গাজায় বাস্তবচিত্র এখনও ভয়াবহ। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রের বরাতে আল-জাজিরা জানায়, আজ ইসরাইলি হামলায় আরও অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ১৪ জন প্রাণ হারান ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে, যেখানে তারা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সংঘাতের শুরুর দিন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ জন। নিহত ও আহতদের অধিকাংশই বেসামরিক, যার মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, সম্প্রতি ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের মতোই এক ‘বিচ্ছিন্ন ও নির্ধারণমূলক হামলা’, যা যুদ্ধের গতি বদলে দিয়েছে। যদিও তিনি সরাসরি হিরোশিমা-নাগাসাকির সঙ্গে তুলনা করতে চান না বলে জানান, তবুও বলেন—“সেগুলো যেমন যুদ্ধ শেষ করেছিল, তেমনি এবার ইরানেও তা ঘটেছে।” ট্রাম্পের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে’ এবং এটি এমন একটি ‘ভয়ংকর অভিজ্ঞতা’, যা ভবিষ্যতে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার পথে দ্বিতীয়বার ভাবাবে।

ট্রাম্প বলেন, তিনি এখন ইসরাইল থেকে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের অপেক্ষায় আছেন এবং বিশ্বাস করেন, এই হামলা ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসের নিদর্শন’ হয়ে থাকবে।

এদিকে হেগে চলমান ন্যাটো সম্মেলনের শুরুতে জোটের মহাসচিব মার্ক রুট্টে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সদস্য দেশগুলোর প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে তাদের জিডিপির ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জোটের সব দেশ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। এ সম্মেলনে অংশ নিয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান জানান, “আমার বিশ্বাস, আগামী এক দশকেও রাশিয়া ন্যাটোর ভূখণ্ডে সরাসরি হামলার সাহস দেখাবে না।”

—সত্য প্রতিদিন/আশিক