মার্কিন ঘোষণার পর মুখ খুলল চীন—কোন বার্তা দিল বেইজিং?

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সর্বশেষ ধাপে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর চীন এবার সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বেইজিং যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানালেও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে দ্রুত আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যে আর কোনো সংঘাত দেখতে চাই না। চীন আশা করে, ঘোষিত যুদ্ধবিরতি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে এবং সব পক্ষ রাজনৈতিক সংলাপে ফিরে আসবে।” তিনি আরও বলেন, “সেনা অভিযান কখনোই স্থায়ী শান্তির পথ হতে পারে না। সংলাপই একমাত্র বাস্তব ও টেকসই সমাধান।”

চীনের এই বার্তা আসে ঠিক সেই সময়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ও ইসরায়েলকে একটি ‘সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে’ পৌঁছানোর ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার ভোর ৪টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এই যুদ্ধবিরতির পটভূমিতে রয়েছে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ধারাবাহিক সহিংসতা। রোববার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ইরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এসব ঘটনাই পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের অন্তত ২৫ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে নিহত হয়েছেন ৪৩০ জন, আহত হয়েছেন ৩,৫০০ জনেরও বেশি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য আবারও এক ভয়াবহ সংঘাতের মুখে পড়তে যাচ্ছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চীনের অবস্থান এই সংকটকে রাজনৈতিক আলোচনার দিকে মোড় নিতে উৎসাহিত করতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহলের মত।

—সত্য নিউজ/আশিক