তেহরানে মোসাদের গোপন ড্রোন কারখানা ধ্বংস করল ইরান

তেহরানের উপকণ্ঠে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ পরিচালিত একটি গোপন ড্রোন ও বিস্ফোরক তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, অভিযানে কারখানাটির অভ্যন্তরে ড্রোন তৈরির অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ, ধাতব কাঠামো এবং বিস্ফোরক উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত রোববার ইরানি পুলিশের প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে কারখানার ভেতরের চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়—ড্রোনের পাখা, কাঠামোর খণ্ডাংশ ও প্রক্রিয়াজাত যন্ত্রাংশ এলোমেলোভাবে পড়ে রয়েছে। ইরান সরকারের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তৃতীয় তলার একটি ভবনের ভেতরেই এসব ড্রোন গোপনে তৈরি করা হচ্ছিল।

ইরানি কর্তৃপক্ষের মতে, এটি শুধু একটি ড্রোন কারখানাই নয়, বরং গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতা চালানোর জন্যও ব্যবহৃত হতো। প্রাপ্ত প্রমাণ অনুযায়ী, এটি ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনারই অংশ।

এ অভিযানের সূত্র ধরে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস ও দ্য গার্ডিয়ান-এর অতীত প্রতিবেদনগুলোর সত্যতাও মিলেছে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত আট মাস ধরে মোসাদ ইরানে ড্রোন পাচারের কাজ চালিয়ে আসছিল এবং ইরানি সামরিক ঘাঁটির আশপাশে মোসাদ এজেন্টরা ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল।

এমন এক সময় এই অভিযান পরিচালিত হলো, যখন গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ চলমান। ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে সমন্বিত নাশকতা ও সাইবার হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

একইদিনে, তেহরানের এক ব্যস্ত সড়কে ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা একটি ট্রাককে ধাওয়া করে থামায়। ট্রাকটিতে উন্নত মানের ইসরায়েলি ড্রোন বহন করা হচ্ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। ঘটনাস্থলে একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা গুলি চালিয়ে ট্রাকটিকে থামান এবং ড্রোনগুলো জব্দ করেন।

এছাড়া, ইরান দাবি করেছে—সম্প্রতি তারা আরও বেশ কয়েকজন বিদেশি এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে, যারা ইরানে সাবোটাজ ও গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

গত শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েলের আকস্মিক এক হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নারী-শিশু নিহত হন। এর জবাবে ইরান বৃহৎ পরিসরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে।

ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, decades ধরে ইসরায়েল চুপিসারে ইরানকে দুর্বল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এবার তারা আগেই জবাব দিতে শুরু করেছে। এ ধরনের তৎপরতা প্রতিহত করতে গোটা দেশে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে।

—আশিক নিউজ ডেস্ক