ইরানের ইসফাহানে ইসরায়েলের নতুন হামলা, চীনের উদ্বেগ, ট্রাম্পের উসকানিমূলক বার্তা

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ শহর ইসফাহানে সমন্বিত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে একযোগে চালানো এই আক্রমণে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ইরানের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে নির্ধারিত কয়েকটি স্থানে একযোগে আঘাত হানা হয়েছে। এই হামলা কতটা ক্ষয়ক্ষতি করেছে, তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে তেহরান কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো নিরপেক্ষ সংস্থা নিশ্চিত তথ্য দেয়নি।

এই ঘটনার পর বিশ্বমঞ্চে উদ্বেগের ছায়া পড়ে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই হামলাকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “ট্রাম্প আগুনে ঘি ঢালার মতো মন্তব্য করছেন, যা এই অঞ্চলের শান্তি আরও বিঘ্নিত করতে পারে।”

এর আগে ইসরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির আশঙ্কায় এই হামলা চালিয়েছে। তেল আবিবের ভাষ্য অনুযায়ী, ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়। তবে ইরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে এক বিস্ময়কর সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা এখনো তেহরানে অবস্থান করছেন, তাদের অবিলম্বে সেখান থেকে সরে যেতে হবে।” এই মন্তব্যকে চীন ‘উসকানিমূলক ও দায়িত্বহীন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলে, এমন বার্তা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

চলমান উত্তেজনার পটভূমিতে ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে, যা কেবল এই দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা বৃহৎ পরিসরে যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে।