জানা গেল নেতানিয়াহুর ইরান হামলার গোপন উদ্দেশ্য

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান শুধু প্রতিক্রিয়ামূলক নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি ‘বিষয়গত পরিবর্তন’ আনার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অভিযান ইরানের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতেও “মূলগত পরিবর্তন” আনতে সক্ষম।

ইরানবিরোধী অভিযানে ইসরায়েলের তিনটি মুখ্য লক্ষ্য:

এক ঘোষণায় নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেন, ইসরায়েলের বর্তমান সামরিক অভিযানের তিনটি প্রাথমিক লক্ষ্য রয়েছে:

১) ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সম্পূর্ণ ধ্বংস।

২) ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের সক্ষমতা নির্মূল।

৩) ইরান সমর্থিত ‘সন্ত্রাসী জোট’ তথা হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুথি মিলিশিয়াদের নির্মূল।

নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা যা প্রয়োজন তাই করব এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয়ে রয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এমনকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার সম্ভাবনাও নাকচ করেননি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কোনো কিছুই অযোগ্য নয় আমাদের সামনে যদি এমন পথ আসে যা আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হয়, আমরা তা বিবেচনায় নেব।”

নেতানিয়াহু এই অভিযানকে ইসরায়েলের ‘অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই’ বলেও আখ্যা দেন। তার ভাষ্য, “ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ইসরায়েলের জন্য শুধু একটি হুমকি নয়, বরং এটি আমাদের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত আক্রমণ। আমরা তা রুখে দেব।”

নেতানিয়াহু দাবি করেন, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। “ওয়াশিংটনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ এবং নীতিগত ঐক্য রয়েছে,” তিনি বলেন। তবে বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত ইরানের অভ্যন্তরে সরাসরি হামলার বিষয়ে পূর্ণ সমর্থনের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

নেতানিয়াহুর বক্তব্য এবং তার নেতৃত্বে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে এক নতুন অস্থিরতা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংঘাত যদি আরও বিস্তৃত হয়, তবে তা শুধু ইসরায়েল-ইরান নয় বরং গোটা অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিতে পারে।

সূত্র- আল-জাজিরা