ভিসি-প্রক্টরসহ ৩০ জন অভিযুক্ত—আবু সাঈদ হত্যার নতুন মোড়!

জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ হিসেবে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় নতুন মোড় এসেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলাটির আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। আদালত বেরোবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসিবুর রহমানসহ ২৬ জন পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

সোমবার (৩০ জুন) সকালে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর দুপুরে এ আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক প্যানেল। মামলায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪ জন ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—

এসআই আমীর হোসেন

কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়

তৎকালীন প্রক্টর শরীফুল ইসলাম

ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এমরান চৌধুরী আকাশ

তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে রংপুরে আবু সাঈদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ সদস্য এবং শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা সরাসরি এই ঘটনায় জড়িত ছিল।

প্রসিকিউটরদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড ছিল একটি পরিকল্পিত ও রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট অপরাধ, যাতে ছাত্র আন্দোলন দমন করতেই বেছে নেওয়া হয় আবু সাঈদকে।

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল চলতি বছরের ১৫ জুন মামলার শুনানিতে আগামী ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তাপ ও বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে এই মামলার অগ্রগতি একটি যুগান্তকারী নজির হতে পারে। শহীদ আবু সাঈদের পরিবার ও সহপাঠীরা দীর্ঘদিন ধরে বিচার চেয়ে আন্দোলন করে আসছিল।

আদালতের নির্দেশে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মহলে স্বস্তি ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়—এই মামলার বিচার আদৌ শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে কি না।