মেসিদের উড়িয়ে কোয়ার্টারে পিএসজি, সামনে বায়ার্ন চ্যালেঞ্জ

প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) রোববার রাতে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের শেষ ষোলোতে ইন্টার মায়ামিকে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের সামনে এখন দাঁড়িয়ে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ, যারা এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ৪-২ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গোকে।

এই ম্যাচে মেসি ছিলেন দর্শকদের মূল আকর্ষণ। ৬৬ হাজারের বেশি দর্শক ভেন্যুতে মায়ামির ‘হট পিঙ্ক’ জার্সি পরে উপস্থিত ছিলেন, অনেকেই আবার আর্জেন্টিনার জার্সি পরেই এসেছিলেন মেসির জন্য।

মায়ামি থামল পিএসজির প্রলয়ঝড়ে

লিওনেল মেসির নেতৃত্বে ইন্টার মায়ামি শেষ ষোলোতে উঠলেও পিএসজির বিপক্ষে তারা কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। লুইস এনরিকের দল শুরু থেকেই আধিপত্য বজায় রেখে গোলের পর গোল করে যায়।

জোয়াও নেভেস প্রথমে ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপর স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রুইজের চাপে বল হারিয়ে বসেন সের্হিও বুসকেটস, যার ফলেই নেভেসের দ্বিতীয় গোলটি আসে।

তৃতীয় গোলটি আসে পিএসজির ডেসাইর ডুয়ের ক্রস বিপর্যয়ের মাধ্যমে, যা টমাস অ্যাভিলেস নিজের জালে জড়িয়ে দেন। হাকিমি গোল করে প্রথমার্ধেই ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের।

দ্বিতীয়ার্ধে মেসি একটি চোখধাঁধানো পাসে সুয়ারেজকে গোলের সুযোগ করে দেন, কিন্তু উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার সেটি কাজে লাগাতে পারেননি। ফ্রি-কিক থেকে মেসির একমাত্র উল্লেখযোগ্য চেষ্টাটিও প্রতিপক্ষের ডিফেন্সেই আটকে যায়।

"এই মৌসুম আমাদের জন্য ঐতিহাসিক": লুইস এনরিক

পিএসজি কোচ লুইস এনরিক বলেন, "এই মৌসুম আমাদের ক্লাবের জন্য ঐতিহাসিক হয়ে উঠছে। আমরা যতদূর সম্ভব যেতে চাই।"

দলের হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ওসমান ডেম্বেলেকে নামানো হলেও ইনজুরি থেকে ফেরা এই উইঙ্গার ছিলেন স্পষ্টতই ছন্দহীন।

মায়ামির সম্মানজনক বিদায়

যদিও বড় ব্যবধানে হেরেছে, তবে দ্বিতীয়ার্ধে ইন্টার মায়ামি কিছুটা দৃঢ়তা দেখায় এবং আরও গোল হজম করা থেকে রক্ষা পায়। জর্দি আলবা বলেন, "আমরা মানুষের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো খেলেছি। তবে আমরা জানতাম, এখনকার সেরা দলের বিপক্ষে খেলা সহজ হবে না।"

বায়ার্নের দাপুটে জয়, কেইনের নৈপুণ্য

একই দিনে অপর ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখ ৪-২ গোলে পরাজিত করে ফ্ল্যামেঙ্গোকে। ইংলিশ তারকা হ্যারি কেইন দুটি দারুণ গোল করে দলকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান। শুরুতেই এরিক পুলগার আত্মঘাতী গোল করেন, এরপর কেইনের শট প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে জালে ঢোকে।

ফ্ল্যামেঙ্গোর জবাব আসে গেরসনের দুর্দান্ত শটে। জর্জিনিও পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেইনের নিখুঁত ফিনিশিংয়ের কাছে হার মানে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি।

শীর্ষ লড়াইয়ের অপেক্ষা

বায়ার্ন কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি বলেন, "এখন বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধারের সময়। সামনে বিশাল এক লড়াই—পিএসজি বনাম বায়ার্ন। বড় মঞ্চে বড় দলগুলোর দ্বৈরথ, আমরা প্রস্তুত থাকব।"

-নাজমুল হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক