সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ আটক

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন অর রশিদকে নাশকতার অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তার নিজ বাসভবনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক জানান, শেখ হারুনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় শেখ হারুন ২০১৯ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের পর নবগঠিত জেলা কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে সেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পায়, যেখানে হারুন দপ্তর সম্পাদক হিসেবে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছিলেন। চিঠিপত্র চালাচালি, সাংগঠনিক সমন্বয় এবং জেলা নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যোগাযোগে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখছিলেন।

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'কোটা আন্দোলনের নামে সহিংসতা প্রতিরোধে' কর্মসূচিতেও তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সংগঠক হিসেবেও ছিলেন। তবে হঠাৎ করে তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে আটক রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন ও প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী এ ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সন্দেহ করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন, দলের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত। এই ঘটনায় দলীয় অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা, দায়িত্বশীলতা ও রাজনৈতিক মূল্যায়নের প্রশ্ন নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

বর্তমানে পুলিশ মামলাটি তদন্তাধীন রেখেছে এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে বিষয়টি শুধু একটি ব্যক্তিগত মামলা নয়, বরং এটি দলের ভাবমূর্তি, নেতৃত্বের স্বচ্ছতা এবং মাঠপর্যায়ে সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতার ওপরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।