আলোচনার নামে একমতের চাপ! জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে প্রশ্ন বিএনপির

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আলোচনার জন্য দলগুলোকে ডেকে পরে সব প্রস্তাবে একমত হওয়ার চাপ প্রয়োগ করা হলে সেটি আলোচনার সৌন্দর্য ও উদ্দেশ্যকে খাটো করে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদি কমিশনের সব প্রস্তাবে শতভাগ একমত হতে হয়, তাহলে আলোচনার প্রয়োজনই বা কেন? ঐকমত্য তো তখন আর থাকল না, সেটা একমতের ফরমায়েশ হয়ে যায়।”

সালাহউদ্দিন জানান, কমিশনের বৈঠকে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা নির্ধারিত ছিল—প্রথমত, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি এবং দ্বিতীয়ত, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন। উভয় বিষয়েই আগের প্রস্তাবগুলো সামান্য পরিবর্তন, সংযোজন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে আবারও উপস্থাপন করা হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে কমিশনকে জানানো হয়, তারা আগেই এনসিসি বা অনুরূপ নিয়োগ কাঠামোর বিষয়ে নির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে, এবং এই কাঠামোতে গেলে পূর্বের প্রস্তাব বিবেচনায় নিতে হবে। একইভাবে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমপিদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার প্রস্তাবেও দলটি একমত হয়েছে।

তিনি বলেন, “যেসব বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ হয়েছে সেগুলো নিয়েই তো জুলাই সনদ তৈরি হবার কথা। এখন যদি বলা হয় সবকিছুতেই একমত হতে হবে—তা হলে তো এই প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।”

দ্বিকক্ষ সংসদের বিষয়ে বিএনপি লিখিত প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান জানালেও, কয়েকটি দল ভিন্নমত প্রকাশ করেছে বলেও জানান সালাহউদ্দিন। পাশাপাশি, নিয়োগ কমিটির প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যমান আইনে প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি রয়েছে, যাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা আসে।

ঐকমত্য কমিশন থেকে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে যে, রাজনৈতিক দলগুলো এখনো পর্যন্ত জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরাই বরং সবচেয়ে আন্তরিকতা দেখিয়েছি এই বিষয়ে। জাতীয় মূলনীতি নিয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, এবং তা আমরা কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, আলোচনা অর্থবহ করতে হলে প্রত্যেক দলকে নিজস্ব মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে এবং সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতেই জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে।