‘দুর্বৃত্তদের রাজনৈতিক আশ্রয় বন্ধ করতে হবে’—বিএনপি মহাসচিবের কঠোর হুঁশিয়ারি

কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘নারী নির্যাতনকারী কেউই মানবতার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না, তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে না।’

রোববার (২৯ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের পাশবিক ঘটনা শুধু নারী নিপীড়নই নয়, এটি মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে এক জঘন্য আঘাত। আমরা এই ঘটনার কঠোর বিচার দাবি করছি।’’

তিনি অভিযোগ করেন, “একটি দুর্বৃত্তচক্র ক্ষমতার আশ্রয়ে থেকে বারবার সমাজে অস্থিরতা তৈরি করছে। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সৃষ্টি করে, তার দায় বিরোধী দলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া পুরোনো ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা আবারও মঞ্চস্থ হচ্ছে। এক সময় যেভাবে আওয়ামী লীগ সরকার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতো, সেই চিত্রই আবার ফিরে এসেছে।”

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, মুরাদনগরের স্থানীয় এক আওয়ামীপন্থী উপদেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলেছেন। তার ক্ষমতার অপব্যবহারে মদদ পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ‘জনসেবা নয়, তিনি আত্মসেবায় ব্যস্ত’, এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “উক্ত ব্যক্তি আওয়ামী এমপিদের মতো এলাকায় আধিপত্য কায়েমে লিপ্ত।”

তিনি আরও বলেন, “এই শ্লীলতাহানি কেবল ব্যক্তিগত সন্ত্রাস নয়, বরং তা একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আবারও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষতবিক্ষত করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই—দলমত নির্বিশেষে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করুন, সুরক্ষিত সমাজ গড়ুন।”

ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বিবৃতিতে শেষবারের মতো দৃঢ় আহ্বান জানান, “নারী, ধর্ম, জাতি, গোষ্ঠী—সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে—এটাই হতে হবে একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রের লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ।”