"বিএনপি নেতার টাকার চাপ, কুমিল্লায় কৃষকদল নেতার বিষপান!"

কুমিল্লার চান্দিনায় বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মাহবুব আলম রুবেল (৪১) নামে এক কৃষকদল নেতা। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।পরিবারের দাবি, পাওনা টাকার মামলার চাপে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মৃত্যুর আগে নিজের মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে গেছেন ঘটনার বিস্তারিত।

রুবেল উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামের বাসিন্দা এবং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকদলের সভাপতি ছিলেন। অভিযোগের তীর একই ইউনিয়নের বিএনপি নেতা ও পানিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গাজী হাসান মাহমুদ হানিফের দিকে, যিনি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন।

নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম জানান, তার স্বামীকে একটি পুরনো লেনদেন নিয়ে হানিফ আদালতে মামলা করেন। সেই টাকা মূলত তার ভাসুর মফিজের সঙ্গে হানিফের লেনদেন ছিল। ২০১৬ সালে এই লেনদেন হলেও, মফিজ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বরগুনায় আত্মীয়ের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে পাওনা টাকার দায় রুবেলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন হানিফ।

সাম্প্রতিক সময়ে হানিফ একাধিকবার রুবেলকে মামলা দিয়ে হেনস্তা করেন এবং রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন বলে দাবি স্ত্রীর। বাজার খরচের টাকাও না থাকায় পরিবার একপ্রকার সংকটে পড়ে। এই চাপে রুবেল বিষপান করেন।

বিষপানের আগে মোবাইলে রেকর্ড করা কলবার্তায় রুবেল বলেন, “হানিফ আমার ভাইয়ের পাওনা টাকার জন্য আমাকে মামলা দিয়েছে। কয়েকদিন ধরে ফোনে হুমকি দিচ্ছে, আওয়ামী লীগের লোকদের নামে মামলা দিতে বলছে। না দিলে তুলে নেওয়ার ভয় দেখাচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা বিএনপি সভাপতিকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমি আর পারছি না, আত্মহত্যাই আমার পথ।”

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হানিফ বলেন, “রুবেল নিজে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, পরে কথা রাখেনি। আমি শুধু মামলা করেছি। অন্য সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

এ বিষয়ে চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, “ঘটনার বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রভাব, পারিবারিক টানাপোড়েন ও আর্থিক চাপ—সবমিলিয়ে রুবেলের মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে নানামুখী আলোচনা। কল রেকর্ডের বিষয়টি তদন্তে নতুন মোড় এনে দিতে পারে।