রোনালদোর এক মাসের আয় জানলে চমকে উঠবেন

বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যেন বয়সকে অস্বীকার করেই সামনে এগিয়ে চলেছেন। মাঠের পারফরম্যান্স তো আছেই, এবার আয়-উপার্জনের দিক থেকেও আবারো প্রমাণ করলেন তিনি এখনো বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর-এর সঙ্গে আরও দুই বছরের জন্য নতুন চুক্তি করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা, যার আর্থিক পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে!

গত কয়েক মাস ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রোনালদোর ভবিষ্যৎ। ইউরোপে প্রত্যাবর্তন, এমএলএস-এ যাওয়া কিংবা অন্য কোনো এশিয়ান লিগে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন ছিল প্রবল। এমনকি নিজেই ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২৭ জুন বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আল নাসরের সঙ্গে আরও দুই মৌসুমের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন তিনি।

চুক্তি সইয়ের পর রোনালদো বলেন, “আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়। আমি সৌদি ফুটবলের ইতিহাসে আরও কিছু যুক্ত করতে চাই।”

ওয়ার্ল্ড সকার টক-এর বরাতে জানা গেছে, রোনালদোর নতুন চুক্তির আর্থিক মূল্য ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা! এই পরিমাণ অর্থ ফুটবলের ইতিহাসে কোনো ব্যক্তিগত অ্যাথলেটের জন্য প্রস্তাবিত সর্বোচ্চ আয়।

এর মানে, রোনালদো প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় ৩৯ মিলিয়ন ডলার, যা এমনকি অনেক ক্লাবের বার্ষিক বাজেটের চেয়েও বেশি।

ফুটবল মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং রোনালদো মানেই তুলনা লিওনেল মেসির সঙ্গে। গোলডটকম-এর তথ্য অনুযায়ী, মেসি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মিয়ামি ক্লাবে বছরে আয় করেন ২০ মিলিয়ন ডলার। সেখানে রোনালদো শুধুমাত্র এক মাসেই আয় করছেন ৩৯ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ মেসির এক বছরের আয়ের প্রায় দ্বিগুণ!

এই তুলনা থেকেই পরিষ্কার, আর্থিকভাবে বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা অ্যাথলেট হচ্ছেন রোনালদো। শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, ৪০ বছর বয়সেও রোনালদো মাঠে অনন্য। আল নাসরের হয়ে ১০৫ ম্যাচে করেছেন ৯৩ গোল যা কোনো তরুণ স্ট্রাইকারের ক্যারিয়ার রেকর্ডকেও হার মানায়। মিডিয়া হাইপ বা বাণিজ্যিক সুবিধা ছাড়িয়ে, রোনালদোর প্রভাব মাঠের প্রতিটি পায়ে স্পষ্ট।

এছাড়া জাতীয় দলের হয়েও দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। পর্তুগালের হয়ে সম্প্রতি জিতেছেন উয়েফা নেশন্স লিগ, দেখিয়েছেন নেতৃত্ব ও নির্ভরতার উদাহরণ।

আল নাসরে যোগদানের পর থেকে সৌদি লিগের জনপ্রিয়তা বহুগুণ বেড়েছে। রোনালদোর মতো সুপারস্টারদের উপস্থিতি স্থানীয় ফুটবলে এনেছে নতুন প্রজন্মের আগ্রহ, আন্তর্জাতিক সম্প্রচার স্বত্ব এবং বিপুল পৃষ্ঠপোষকতা।

একদিকে যেমন রোনালদো অর্থনীতিকে বদলে দিচ্ছেন, অন্যদিকে ক্রীড়াঙ্গনেও তৈরি করছেন এক নতুন উদাহরণ যেখানে বয়স, অঞ্চল বা প্রচলিত ধ্যানধারণা কোনো বাধা নয়।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ইতিহাসে বহুবার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছেন এবারও করলেন তাই। মাঠে, মঞ্চে এবং মুল্যমানের দিক থেকেও তিনি প্রমাণ করছেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়াই তার স্বভাব। ৪০-এর ঘরে পা দিয়েও তিনি আজ বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে আলোচিত নাম, সবচেয়ে আয়কারী খেলোয়াড় এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী এক ব্যক্তিত্ব।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক