চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে? সিপিবি দিল হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্বার্থবিরোধী একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে রাখাইনে করিডোর অনুমোদন, নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া, স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি এবং সমরাস্ত্র কারখানার অনুমতি প্রদান।

শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ‘সাম্রাজ্যবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের ব্যানারে’ আয়োজিত রোডমার্চ কর্মসূচিতে তিনি এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের জাতীয় অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। এ বন্দরের ব্যবস্থাপনায় যদি কোনো বিদেশি শক্তি প্রবেশ করে, তাহলে তা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।”

রুহিন হোসেন আরও বলেন, “রোডমার্চ কর্মসূচি আগামীকাল পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যে সরকার যদি দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়, তবে সমাপনী সমাবেশ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।”

রোডমার্চে সিপিবির পক্ষ থেকে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া যাবে না এবং এটি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হতে হবে; রাখাইনে করিডোর দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে; স্টারলিংক, সমরাস্ত্র কারখানা ও করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে জড়ানোর উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে; এবং বিগত ও বর্তমান সরকারের আমলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি প্রকাশ করে, জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও অসম চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সভাপতি মফিজুর রহমান লালটু, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সিপিবির নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক বিপ্লব, সিপিবির আইনবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম বাবুল, সিপিবি সোনারগাঁও উপজেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ও বাসদের সোনারগাঁও উপজেলা আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকার একের পর এক চুক্তির মাধ্যমে দেশের কৌশলগত খাতগুলো বিদেশি নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জনমত উপেক্ষা করে এসব সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলছে। তারা দাবি করেন, দেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে নীতিনির্ধারণ না করে গোপনে চুক্তি করা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি চরম অবজ্ঞা।

—সত্য প্রতিদিন/আশিক