কুষ্টিয়ায় শিয়ালের ধাক্কায় সিএনজি উল্টে গৃহবধূ নিহত

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নাছিমা খাতুন (৫০) নামে এক গৃহবধূ। দুর্ঘটনার পর তার স্বামী পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মজিদ আহত অবস্থায় প্রাণে বেঁচে গেলেও, স্ত্রীকে হারিয়ে তিনি এখন শোকসাগরে ভাসছেন।

নিহত নাছিমা খাতুন কুমারখালীর যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মজিদের স্ত্রী ছিলেন। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে একসঙ্গে কুষ্টিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন এই দম্পতি। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।

পথিমধ্যে রাত প্রায় ১২টার দিকে কুমারখালী উপজেলার সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতু এলাকায় অটোরিকশাটি একটি শিয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে। হঠাৎ করে মহাসড়কের ওপর উঠে আসা শিয়ালটি সিএনজির সামনের অংশে ধাক্কা দিলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মুহূর্তেই সিএনজিটি উল্টে যায় এবং নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নাছিমা খাতুন।

তার স্বামী আব্দুল মজিদ দুর্ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, “চিকিৎসক দেখিয়ে আমরা সিএনজিতে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ সেতুর কাছে একটি শিয়াল গাড়ির সামনে চলে আসে। ধাক্কা লাগতেই সিএনজি উল্টে যায়। আমি কোনোমতে বেরিয়ে আসলেও আমার স্ত্রী নিচে পড়ে যায় এবং সেখানেই মারা যায়।”

পরদিন শুক্রবার (২৭ জুন) বাদ জুমা জানাজা শেষে জোতমোড়া ও বরইচারা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার চৌড়হাঁস হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সিএনজিচালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা সিএনজিটি জব্দ করেছি এবং লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, বাংলাদেশের আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোতে বিশেষ করে রাতে চলাচলের সময় প্রাণীকূলের উপস্থিতি ও চালকদের অসতর্কতা একসঙ্গে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

একটি ছোট প্রাণীর কারণে একটি পরিবার চিরদিনের জন্য বিভক্ত হয়ে গেল এ যেন নির্মম বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক