সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফুটবল চুক্তির নায়ক এখন রোনালদো

ফুটবল ইতিহাসে আর্থিক দিক থেকে এমন অভাবনীয় কোনো চুক্তি হয়তো এর আগে কখনও দেখা যায়নি। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সৌদি ক্লাব আল-নাসর তার সঙ্গে যে নতুন চুক্তিটি করেছে, সেটি শুধু ফুটবল নয়, গোটা ক্রীড়াবিশ্বের অর্থনীতির ধারাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই অবিশ্বাস্য চুক্তির বিস্তারিত।

বৃহস্পতিবার বিকেলে আল-নাসর আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, তারা ক্লাবের অধিনায়ক রোনালদোর সঙ্গে আরও দুই বছরের জন্য নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এর মাধ্যমে শেষ হওয়ার গুঞ্জন ওঠা সৌদি অধ্যায় নয়, বরং নতুন মোড় নিচ্ছে রোনালদোর মধ্যপ্রাচ্য মিশন।

এই চুক্তির আওতায় বছরে রোনালদোর আয় দাঁড়াবে ১৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫৩৭ কোটি টাকা। এর মানে দাঁড়ায়—প্রতিদিন তিনি আয় করবেন প্রায় ৭ কোটি টাকা এবং দুই দিনে ১৩ কোটিরও বেশি। কেবল চুক্তিতে সই করার জন্যই রোনালদো পেয়েছেন ২৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হলে ৩৮ মিলিয়নে উন্নীত হবে—বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫৩৮ কোটি!

এতে থেমে নেই প্রণোদনা। গোল্ডেন বুট জয় করলে মিলবে ৪ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৫৬ কোটি টাকা), আর আল-নাসর লিগ জিতলে রোনালদো পাবেন আরও ৮ মিলিয়ন পাউন্ড (১১২ কোটি টাকা)। সবমিলিয়ে চুক্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ৫০ কোটি পাউন্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে—বাংলাদেশি টাকায় যা ৭ হাজার কোটিরও বেশি!

এই ব্যতিক্রমী চুক্তির আরেকটি বিস্ময়কর দিক হলো—রোনালদোকে দেওয়া হয়েছে আল-নাসর ক্লাবের ১৫ শতাংশ মালিকানা, যার বাজারমূল্য ৩৩ মিলিয়ন পাউন্ড (৪৬৭ কোটি টাকা)। পাশাপাশি, তিনি ক্লাবের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

২০২৪-২৫ মৌসুমে ব্যর্থতার পর অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, সৌদি আরবে রোনালদোর অধ্যায় বুঝি শেষ। কিন্তু সে ধারণাকে মিথ্যে প্রমাণ করে ‘সিআর সেভেন’ জানিয়ে দিলেন—তিনি কোথাও যাচ্ছেন না। বরং ইতিহাস গড়া এক চুক্তিতে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকছেন ‘ফারিস নাজর’দের সঙ্গে।

রোনালদোর বয়স ৪০ ছুঁইছুঁই হলেও মাঠে তার দাপট আর বাজারমূল্যে তার প্রভাব এখনো অনন্য। এই চুক্তি প্রমাণ করছে, বয়স সংখ্যামাত্র—তারকামূল্য গড়ে ওঠে কীর্তি, প্রভাব আর এক অবিচল ক্যারিশমায়।