জুন ২৫-এর শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ: দরপতনের শীর্ষ দশ

২৫ জুন, বুধবারের লেনদেন শেষে দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। দিনজুড়ে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে এবং তা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় হয়েছে দরপতনের শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায়। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, কিছু কোম্পানি আগের দিনের ক্লোজিং দামের তুলনায় বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে, আবার কিছু কোম্পানি দিনের শুরুতে ওপেন হওয়া দামের তুলনায় লেনদেনের শেষ দিকে বেশ নিচে নেমে গেছে।

ক্লোজিং দামের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ দর হারানো কোম্পানির তালিকায় শীর্ষে ছিল VAMLRBBF, যার শেয়ার দর ৫.৮ টাকা থেকে কমে দাঁড়ায় ৫.৫ টাকায়—দরপতন ঘটে ৫.১৭ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে FBFIF (২.৮৬%), FAREASTFIN (২.৭০%), এবং SHYAMPSUG (২.৬৭%)। উল্লেখযোগ্যভাবে BERGERPBL-এর মতো একটি ব্লু-চিপ কোম্পানিও ২.৫৯ শতাংশ দর হারিয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার গভীরতা নির্দেশ করে। এছাড়া ZAHINTEX, MIDLANDBNK, এবং STYLECRAFT-এর মতো কোম্পানিগুলোর দরও ২ শতাংশের বেশি হারে কমেছে।

অন্যদিকে ওপেনিং দামের তুলনায় শেষ লেনদেনের (LTP) ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় PROGRESLIF শীর্ষে রয়েছে, যার শেয়ার দর ৪৮.৬ টাকা থেকে কমে দাঁড়ায় ৪৬.০ টাকায়—যা ৫.৩৫ শতাংশ পতন। এছাড়া GREENDELMF (৫.১৩%) ও CAPMIBBLMF (৪.৬৫%) এর পতনও বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। DAFODILCOM, PRIMETEX, ZEALBANGLA, PADMALIFE এবং EMERALDOIL—এই কোম্পানিগুলোও ৩ থেকে ৪ শতাংশ হারে দর হারিয়েছে, যা মধ্য ও ক্ষুদ্র মূলধনী শেয়ারগুলোর উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকটকে সামনে আনে।

এই ধারাবাহিক দরপতনের পেছনে নানা প্রেক্ষাপট থাকতে পারে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ঘাটতি—এসব উপাদান বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে। বিশেষভাবে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের একাধিক কোম্পানির দরপতন এই খাতের প্রতি অনাস্থার ইঙ্গিত দেয়। আবার ব্লু-চিপ শেয়ারের পতন বাজারের গভীর দুর্বলতাকে প্রকাশ করে, যা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগজনক।

সবশেষে বলা যায়, বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার সময় এসেছে। কোনো শেয়ারে বিনিয়োগের আগে মৌলিক বিশ্লেষণ, কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিবেশ বিবেচনায় নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সাময়িক দরপতন সংশোধনের প্রক্রিয়ার অংশ হলেও, বেছে নেওয়া শেয়ারগুলোর ভবিষ্যৎ প্রবণতা ও বাজার মনস্তত্ত্ব বোঝা বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।