‘মব জাস্টিস’ মানবতার শত্রু: তারেকের তীব্র সমালোচনা

জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস (২৬ জুন) উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনাকে মানবতার শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। নির্যাতিতদের প্রতি সমর্থন জানানোর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের অবনতি ও অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তারেক রহমান বলেন, “বিশ্বব্যাপী রক্তঝরা, হত্যাকাণ্ড ও অত্যাচারের ছায়া পড়েছে মানুষের জীবন-জীবিকার উপর। স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরোধীদের ওপর ভয়ানক দমন-পীড়ন চালিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করছে। একনায়কদের নিষ্ঠুর শাসনে হাজার হাজার মানুষ গুম, খুন, মিথ্যা মামলায় বন্দি ও পঙ্গুত্বগ্রস্ত হয়েছে।”

তিনি আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে প্রায় ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্র বন্দি করে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন বিরাজ করছে। এই সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা শৃঙ্খলে বন্দি হয়েছে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দমন করা হয়েছে। “চিকিৎসাধীন নেত্রীর সুচিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছিল, পুরো দেশ ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে বন্দী ছিল,” যোগ করেন তিনি।

তারেক রহমান ফ্যাসিবাদী সরকারের অপরাধমূলক আচরণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং পেটোয়াবাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক সমাজ ছাড়া মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয় না। আমাদের এখনও গণতন্ত্রের শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”

বিশেষ করে ‘মব জাস্টিস’ নামে যে হিংস্র আন্দোলনা বর্তমান তা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে বিপন্ন করছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। “গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,” যোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই দিনে একটি বক্তব্যে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “গত বছরের গণঅভ্যুত্থান দমন নীতির কারণে অসংখ্য প্রাণহানি ও পঙ্গুত্ব ঘটেছে। আওয়ামী সরকারের দমননীতির ফলে গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য গণতন্ত্রকামীদের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নিপীড়ন চালানো হয়েছে।”

ফখরুল বলেন, “সরকারের সন্ত্রাসী শাসনে হাজারো মানুষ গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন। দেশের মানুষ নৈরাজ্যের অন্ধকারে বসবাস করছে।” তিনি নির্যাতিতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের তীব্র আহ্বান জানান।