কারাগার থেকে জানাজায়, ফের কাফেলার পথে যুবলীগ নেতা!

প্যারোলে মাত্র দুই ঘণ্টার মুক্তি—তাতেই শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখা এবং জানাজায় অংশগ্রহণ। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন পাশার জীবনে এই ক্ষণিকের সময়টি হয়ে উঠল বেদনায় বিদ্ধ ও আবেগঘন এক অধ্যায়।

গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোরে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মা জাহানারা বেগমের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন তিনি। সকাল ৮টায় মুক্তি পাওয়ার পর, সকাল ১০টায় জানাজা ও দাফন শেষে পুলিশের পাহারায় তাঁকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, মায়ের মৃত্যুতে আদালতের অনুমতি অনুযায়ী আনোয়ার পাশাকে বিশেষভাবে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।মরহুমা জাহানারা বেগম সোমবার বিকেল ৩টার দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর তাঁর ছেলে প্যারোলে মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার জন্য তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁকে নেওয়া হয় ষোলটাকা ইউনিয়নের মিনাপাড়া কবরস্থানে, যেখানে তিনি মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। প্যারোল শেষে তাঁকে আবারো কারাগারে পাঠানো হয়।

আনোয়ার হোসেন পাশা বর্তমানে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার ২ নম্বর আসামি।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ গাংনীর রাইপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত এক ইফতার মাহফিলের আড়ালে ‘নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতির’ অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়।

ঘটনার মূল অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত ইফতারে উস্কানিমূলক স্লোগান ও রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরির চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ১৩ এপ্রিল মাসুম খন্দকার নামের একজন বাদী হয়ে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: ১৫)। মামলায় আনোয়ার পাশাসহ মোট ৮৩ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার তদন্তে, আনোয়ার পাশাকে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চরমোনতাজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ। পরদিন ২৩ এপ্রিল তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

অভিযুক্ত হলেও জনমানুষের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর প্যারোলে মুক্তি, মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ—সব মিলিয়ে এই ঘটনা স্থানীয়ভাবে আবেগ ও রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে।