ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের নিয়ে ঢাকা কলেজে ছাত্রদলের হুঁশিয়ারি বার্তা

ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (ছাত্রদল) কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিবাদী মানসিকতার শিক্ষকদের বিচার ছাড়া এই দেশের ছাত্ররাজনীতির অবক্ষয় ঠেকানো সম্ভব নয়।”

সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১১টায় ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে ছাত্রদলের নতুন সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাকিবুল হাসান বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল বারবার হামলার শিকার হয়েছে, রক্ত দিয়েছে, তবুও ছাত্র রাজনীতির মাঠ ছেড়ে যায়নি। “ছাত্রদল বরাবরই ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়ে প্রথম কাতারে ছিল,” তিনি বলেন। “এই কলেজের মাটি আমাদের রক্তে ভেজা। আন্দোলনের চিহ্ন আজও স্পষ্ট।”

তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ছাত্রলীগ যেভাবে বোমাবাজি ও সহিংসতায় যুক্ত হচ্ছে, তা নতুন নয়। তবে তার ভাষায়, “ছাত্রদলই একমাত্র সংগঠন যারা এককভাবে ছাত্রলীগের সেই দুঃসাহসের জবাব দিয়েছে। দেশের আর কোনো ছাত্রসংগঠন এমন ভূমিকা রাখতে পারেনি।”

ছাত্রলীগের পাশাপাশি, তিনি সরাসরি কিছু শিক্ষকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “দেশের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা হারিয়ে সরাসরি ফ্যাসিবাদী দমননীতির সহযোগী হয়েছেন। আমরা সেই শিক্ষকদেরও বিচারের আওতায় আনতে চাই। কারণ তারা ক্ষমতার যন্ত্র হয়ে শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করেছেন।”

ছাত্রদল সভাপতি ডাকসু, জাকসু ও দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পুনরায় চালু করার দাবি জানান। তিনি বলেন, “আমরা সেই নির্বাচনে অংশ নেব—কিন্তু সেটা আমাদের কৌশলগত সিদ্ধান্ত। তবে যদি বিচারহীনতার ভিত্তিতে ছাত্র সংসদ পরিচালিত হয়, তাহলে ইতিহাসে তা ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হবে।”

এ সময় তিনি পূর্ববর্তী আন্দোলনের অভিজ্ঞতা টেনে এনে বলেন, “জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। সাইন্সল্যাব ও নীলক্ষেত মোড়ে আমরা প্রতিরোধ গড়েছি, গুলি খেয়েছি, জেল-জুলুম সহ্য করেছি।”

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসান বলেন, “বিগত ১৭ বছর ধরে ছাত্রদল শোষণবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারিতে ছিল। ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের বলিষ্ঠ উপস্থিতি ছিল।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, শাহাদাত হোসেন মানিক, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক