পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের নতুন ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পরও দেশটি তাদের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা (AEOI)-র মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটাই প্রথমবার নয় যে আমাদের স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হলো। আমাদের সক্ষমতা ও অভ্যন্তরীণ শক্তির ওপর ভিত্তি করে পারমাণবিক শিল্প অবশ্যই চলবে।” তিনি আরও জানান, এই শিল্প ইরানের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং জাতীয় মর্যাদার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর কোনো বাহ্যিক চাপেই তা থেমে থাকবে না।

কামালভান্দির বক্তব্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ফোরদো, ইসফাহান ও নাতানজ—এই তিনটি কৌশলগত স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফোরদো একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, ইসফাহানে রয়েছে রূপান্তর ও গবেষণা কেন্দ্র, আর নাতানজ হলো ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আগেও বহুবার হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়া একটি স্থাপনা। তবে এসব স্থানে কোনো ধরনের তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঘটনা ঘটেনি বলে জানানো হয়, যা ইঙ্গিত করে যে সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো কার্যকর রয়েছে।

ইরান দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ এবং চিকিৎসা, শক্তি উৎপাদন ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাম্প্রতিক মূল্যায়নেও বলা হয়েছে যে, ইরান বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্রিয় প্রচেষ্টায় নেই। তা সত্ত্বেও, এই হামলা নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে তা গোটা অঞ্চলে একটি নতুন পারমাণবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

সবশেষে কামালভান্দি বলেন, “জাতি হিসেবে আমরা বহুবার নিষেধাজ্ঞা, অন্তর্ঘাত ও সামরিক আগ্রাসনের মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এসব আমাদের অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি। আমরা আগেও এগিয়েছি, এখনও এগোব এই পথেই।”

সূত্র: আল জাজিরা