বাড়ল বাজেট, বাড়ল ব্যয়—আপনার পকেটে পড়বে প্রভাব?

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। রোববার (২২ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৯১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূর্বে ছিল ৮১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা এবং অনুদানসহ এই ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। সরকার ৪ হাজার কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯৬ হাজার কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা আসবে ব্যাংক খাত থেকে এবং ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক-বহির্ভূত উৎস থেকে। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ১ লাখ কোটি এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ ২২ হাজার কোটি টাকা।

রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত কর ১৯ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত আয় ৪৬ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে আবর্তক ব্যয় ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা এবং ঋণের সুদ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। মূলধন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা।

এবারের উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাবদ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, স্কিমে ব্যয় ৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, বিশেষ প্রকল্পে ৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা এবং স্থানান্তর ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে ব্যয় ২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।