বিদেশে অর্থ পাঠানো সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক, যেভাবে পাঠাবেন..

বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশে অর্থ পাঠানোর বিধান আরও সহজ করেছে। ১৯ জুন জারি করা বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে শিল্প, ট্রেডিং, আইটি, কনসাল্টিংসহ শিল্পনীতির তালিকাভুক্ত সব খাত বার্ষিক বিক্রয়ের ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার (যেটি বেশি) পর্যন্ত অর্থ চলতি হিসাবে বিদেশে পাঠাতে পারবে। পূর্বে এই সুবিধা কেবল উৎপাদন ও নির্বাচিত সেবা খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। নতুন নির্দেশনার ফলে ট্রেডিংসহ বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও সহজেই বৈদেশিক লেনদেন করতে পারবে, যা ব্যবসার ব্যয় পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা হিসেবে কাজ করবে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করেছে যে, অনুমোদিত ডিলার (AD) ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে, সংশ্লিষ্ট অর্থ বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকারের কোনো আলাদা অনুমোদন প্রয়োজন কিনা। প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি সংগ্রহ করেই লেনদেন সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া রয়্যালটি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ফি, টেকনিক্যাল সহায়তা ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি–সংক্রান্ত রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে যথারীতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমোদন ও নির্দেশনা মানা বাধ্যতামূলক।

নতুন নির্দেশনার আওতা থেকে ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান, মাইক্রোফাইন্যান্স ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাইরে রাখা হয়েছে। ফলে এই সুবিধা মূলত ব্যবসায়িক ও শিল্প খাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে। নির্দেশনার ফলে ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন বিদেশি সফটওয়্যার ফি, সেবা খরচ, ই-কমার্স বা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ–জাতীয় খরচ অনায়াসে পাঠাতে পারবে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণ সহজতর হবে এবং অর্থনীতির গতি বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে একইসাথে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান ডলার সংকটের বাস্তবতায় এমন খোলামেলা বৈদেশিক ব্যয় অনুমোদনের ফলে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ মে মাস শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ (IMF এর BPM6 অনুযায়ী হিসাব অনুযায়ী) ২০.২৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের তুলনায় অনেকটাই নিচে। তা সত্ত্বেও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ী মহল।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক