গোসল ফরজ হলে যেসব কাজ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ—জেনে নিন শরিয়তের দৃষ্টিতে

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে ‘গোসল ফরজ’ হওয়া মানে হচ্ছে এমন একটি শারীরিক ও আত্মিক অবস্থা, যেখানে শরীর সম্পূর্ণরূপে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকে। ইসলামী ফিকহশাস্ত্রে এ নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, যা প্রতিটি সচেতন মুসলমানের জানা জরুরি।

গোসল ফরজ অবস্থায় সর্বাগ্রে যে বিষয়টি নিষিদ্ধ, তা হলো নামাজ আদায়। শরীর অপবিত্র থাকলে কোনো অবস্থাতেই ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত কিংবা নফল নামাজ পড়া জায়েজ নয়। পবিত্রতা (তাহারাত) ছাড়া নামাজ শরিয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হয় না।

এ অবস্থায় দ্বিতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা হলো কুরআন তিলাওয়াত। মুখস্থ থাকলেও গোসল ফরজ অবস্থায় কুরআনের আয়াত মুখে বলা বা তিলাওয়াত করা ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পবিত্রতা ছাড়া কুরআনের আয়াত পাঠ করাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করেছে।

তৃতীয়ত, কুরআন শরীফ স্পর্শ করাও এই অবস্থায় হারাম। মূল mushaf (কুরআনের মুদ্রিত কপি) স্পর্শ করতে হলে পূর্ণ পবিত্রতা অপরিহার্য। তবে মোবাইল বা কম্পিউটারে কুরআন দেখা বা পড়া নিয়ে কিছুটা ভিন্ন মত রয়েছে, তবুও সরাসরি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

তবে শরিয়তের দৃষ্টিতে গোসল ফরজ অবস্থায় কিছু প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন কাজ যেমন—খাওয়া, পানি পান, কথা বলা, চলাফেরা, ঘুমানো—ইত্যাদি করা নিষিদ্ধ নয়। তবে এসব কাজ করার আগে অন্ততপক্ষে মুখ ধুয়ে নেওয়া, গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করা বা ওজু করে নেওয়া সুন্নাত এবং পুণ্যময় কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।

গোসল ফরজের বিষয়টি ইসলামে কেবল বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং এক গভীর আত্মিক প্রস্তুতির অংশ। পবিত্রতা ছাড়া ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় না—এই মৌলিক শিক্ষা মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে সচেতনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের দিকে আহ্বান করে।