১৮তম প্রতিশোধ! ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানে কাঁপছে ইসরাইল

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’-এর অংশ হিসেবে ১৮তম প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) জানায়, এই সর্বশেষ আক্রমণে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন এবং উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন স্ট্রাইক মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছে, যা ইসরায়েলের একাধিক কৌশলগত স্থাপনায় আঘাত হানে।

শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, তেলআবিব এবং দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কেন্দ্রস্থলে পরিচালিত এই অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছে আত্মঘাতী ও যুদ্ধ ড্রোন, পাশাপাশি তরল ও কঠিন জ্বালানিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র। হামলার লক্ষ্যস্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর লজিস্টিক ও অপারেশনাল কেন্দ্র, এবং দখলদার সরকারের সামরিক স্থাপনাগুলো।

আইআরজিসির দাবি, ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ইরানি ড্রোন ও মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানে। বিশেষ করে, শাহেদ-১৩৬ ড্রোনের একাধিক স্কোয়াড্রন শুক্রবার রাতজুড়ে অধিকৃত ভূখণ্ডে টার্গেটেড স্ট্রাইক পরিচালনা করেছে, যা ইসরায়েল পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইরান এখন হাইব্রিড পদ্ধতিতে—অর্থাৎ ড্রোন ও মিসাইলের সমন্বয়ে—যুদ্ধ পরিচালনা করছে, যা ভবিষ্যতেও “নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত থাকবে”।

এই প্রতিক্রিয়া মূলত ১৩ জুন ভোর থেকে ইসরায়েল কর্তৃক শুরু হওয়া হামলার পাল্টা জবাব। ইরানের দাবি অনুযায়ী, বিনা উসকানিতে পরিচালিত সেই আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জুন পর্যন্ত অন্তত ১৮ দফা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’ ইরানের প্রতিরক্ষা কৌশলে একটি উল্লেখযোগ্য পর্ব। এতে ইঙ্গিত মিলছে যে, তেহরান এখন কেবল প্রতিক্রিয়াশীল নয়—আক্রমণাত্মক ও কৌশলগতভাবে সংগঠিত এক সামরিক কাঠামোতেও নিজেকে রূপ দিচ্ছে।

এই অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও তীব্রতর হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। বিশেষ করে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যদি একপাক্ষিক প্রতিশোধের গণ্ডি পেরিয়ে সরাসরি যুদ্ধাবস্থায় পৌঁছে যায়—তবে তাতে গোটা অঞ্চলই ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

সূত্র: আল-জাজিরা