ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ উত্তেজনা ফের তুঙ্গে

দক্ষিণ লেবাননের নাকুরা অঞ্চলে ইসরায়েলি নৌবাহিনী হিজবুল্লাহর একটি সামরিক স্থাপনায় নিশ্ছিদ্র হামলা চালিয়েছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ ‘রাদওয়ান ফোর্স’ নামের হিজবুল্লাহর বিশেষ কমান্ডো ইউনিটের একটি ঘাঁটিতে রাতে হামলা চালায়, যেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হতো। হামলার তথ্য ইসরায়েলি গোয়েন্দা তদন্তের ভিত্তিতে এসেছে, যেটি কয়েক সপ্তাহ আগে হিজবুল্লাহর এক সদস্যকে ঘিরে চালানো হয়েছিল।

হিজবুল্লাহ এখনও এই হামলা বা অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেনি। উল্লেখযোগ্য যে, গত নভেম্বর মাসে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়, যার পর থেকে একাধিকবার সীমানায় সংঘর্ষ এড়ানো হলেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক হামলার লক্ষ্যবস্তুতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের আশেপাশের এলাকাগুলোও পড়েছে।

‘রাদওয়ান ফোর্স’ হিজবুল্লাহর একটি উচ্চ প্রশিক্ষিত বিশেষ কমান্ডো ইউনিট, যারা দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয়, এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের জন্য বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত। ইসরায়েলি সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ইউনিটটি ইসরায়েলের নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই হামলার ফলে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। রাজনৈতিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, ইসরায়েলের এই ধরনের অভিযানের ফলে হিজবুল্লাহ প্রতিক্রিয়া দিতে পারে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। লেবাননের সাধারণ জনগণ ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের নিয়মিত বিমান ও স্থল হামলায় উদ্বিগ্ন এবং নতুন এই আক্রমণ সেই উদ্বেগকে তীব্র করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে পরিস্থিতি অস্থির এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করছে হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়ার ওপর। ইসরায়েল পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা নিজেদের সুরক্ষার জন্য এই ধরনের হামলা চালাতে বাধ্য হচ্ছে। তবে এই অভিযান যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যতকে গুরুতর প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে, যা বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে গভীর উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক