ইরানের নিরাপত্তা সদর দফতরে হামলা: ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় নতুন মোড়

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের দাবি করা সাম্প্রতিক বিমান হামলা। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সদর দফতর’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, তেহরান ও আশপাশের অঞ্চলে একাধিক সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ‘গুরুত্বপূর্ণ সামরিক লক্ষ্যবস্তু’ ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করছে দেশটি।

এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জানানো হয়েছে, “আমাদের বিমানবাহিনী তেহরান অঞ্চলে ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সামরিক অবকাঠামোয় নির্ভুল হামলা চালাচ্ছে।” যদিও এসব হামলার সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

খামেনির কড়া বার্তা: ‘শান্তির নামে চাপ মেনে নেওয়া হবে না’এ ঘটনার পরপরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

খামেনি বলেন, “যেভাবে ইরান চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করেছে, তেমনি চাপিয়ে দেওয়া শান্তির বিপক্ষেও দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।” তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল তাদের ভুলের জন্য কঠিন শাস্তি পাবে।”

তিনি যুক্তরাষ্ট্রকেও কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলেন, “আমেরিকানদের জানা উচিত, যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ ইরানের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জ নয়, তেমনি তা মার্কিনদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হবে। এর পরিণতি তারা সহজে সামাল দিতে পারবে না।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, “যারা ইরান, ইরানি জাতি ও ইতিহাস সম্পর্কে জানেন, তারা কখনো হুমকির ভাষায় কথা বলেন না। কারণ এই জাতি কারও চাপে মাথানত করে না।”

এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও হামলার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং ইরানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা দেখা যেতে পারে।

—আশিক নিউজ ডেস্ক