ফুলপুরে সেপটিক ট্যাংক থেকে কিশোরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার, প্রেমসংক্রান্ত ঘটনায় হত্যার অভিযোগ

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় সেপটিক ট্যাংক থেকে আবু রায়হান (১৭) নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের সকল্লা এলাকার একটি বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রায়হান ছনধরা ইউনিয়নের মেরিগাই গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পরিবার নিয়ে তিনি ভাইটকান্দি মোড়ে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।

ঘটনার পেছনের সম্পর্ক ও উত্তেজনাস্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, আবু রায়হানের সঙ্গে প্রতিবেশী শেখ ফরিদের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কিছুদিন আগে শেখ ফরিদ ও তার ছেলে সাগর রায়হানকে রাস্তায় ধরে মারধর করে। এরপর থেকেই তাকে ওই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে হুমকি দেওয়া হয়।

রায়হান সর্বশেষ গত শুক্রবার (১৩ জুন) রাত ১১টার দিকে নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। এরপর তারা ফুলপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

সন্ধানে গন্ধ ও ভয়ংকর আবিষ্কারসোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সকল্লা এলাকার এক বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ট্যাংকের ঢাকনা খুলে অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আইনি প্রক্রিয়া ও তদন্তফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাদি জানান, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রেমসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই রায়হানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শেখ ফরিদ ও তার ছেলে সাগর পলাতক রয়েছেন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়াএ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা পরিবারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং তরুণদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।