এস আলমের আরও ২০০ একর জমি জব্দ

প্রচলিত অর্থে আলোচিত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি আরও এক ধাপ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সর্বশেষ, ১৮০ কোটি ৬১ লাখ টাকা মূল্যের ২০০.২৬ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব, যা এস আলম, তার পরিবারের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তার নামে রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই আদেশ আসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হকের আবেদনের ভিত্তিতে। আবেদনে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপ ও সংশ্লিষ্ট সত্তাগুলোর বিরুদ্ধে একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা অভিযোগের তদন্ত করছে যে এস আলম গ্রুপ বেআইনিভাবে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে সেসব অর্থ আত্মসাৎ করে দেশে ও বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছে।

দুদক জানিয়েছে, অনুসন্ধান চলাকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাইফুল আলম ও তার ঘনিষ্ঠজনেরা তাদের স্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। ফলে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সম্পত্তি জব্দ করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।।

এক নজরে জব্দকৃত সম্পত্তির পরিসংখ্যানসাইফুল আলম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

২৩ এপ্রিল: ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দ

১৭ এপ্রিল: ১,৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (মোট টাকা: ২,৬১৯.০৭ কোটি)

১০ মার্চ: ১,০০৬ বিঘা জমি জব্দ

৯ এপ্রিল: ৯০ বিঘা জমি এবং ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

২৩ ফেব্রুয়ারি: ৮,১৩৩.৫৬ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ

৩ ফেব্রুয়ারি: ৩৬৮.২৫ কোটি টাকার ১৭৫ বিঘা জমি জব্দ

১২ ফেব্রুয়ারি: ৫,১০৯ কোটি টাকা মূল্যের ৪৩৭.৮৫ লাখ শেয়ার অবরুদ্ধ

১৬ জানুয়ারি: ৩,৫৬৩.৮৪ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

৭ অক্টোবর: সাইফুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক এসব আদেশ দেশের ব্যাংকিং খাত ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলায় দুর্নীতির মাত্রা ও প্রভাব স্পষ্ট করে তোলে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আর্থিক সম্পদ বেআইনিভাবে অর্জনের অভিযোগ দেশের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।

রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক