ঢাকার ২০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিকভাবে সুসংগঠিত ও সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা থাকলেও দেশব্যাপী ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। ইতোমধ্যে ২৯৬টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একাধিক আলোচিত নেতা।

দলের কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসমর্থন নিশ্চিত করতে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সভা-সমাবেশ, জনমত গঠনের কৌশল ও দমন-পীড়নের স্মৃতি তুলে ধরে ভোটারদের আস্থা অর্জনে কাজ করছেন তারা।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত। কোনো একটি দল বা জোটের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ও কৌশল অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সময়োপযোগীভাবে নেওয়া হবে।”

সূত্রমতে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে জামায়াত সাংগঠনিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। বিএনপি যেখানে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু না করলেও, জামায়াত তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছে এবং জনমুখী রাজনীতি জোরদার করেছে।

এদিকে, ৩০০ আসনের মধ্যে চারটি আসনে (রাজশাহী-২, মানিকগঞ্জ-২, ঢাকা-৯ ও কুমিল্লা-৭) এখনো সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। তবে ঢাকার ২০টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম নির্ধারিত হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান (ঢাকা-১৫), ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম (ঢাকা-১), ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান (ঢাকা-২), ড. আব্দুল মান্নান (ঢাকা-৬), অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন (ঢাকা-৮), সাইফুল আলম খান মিলন (ঢাকা-১২) প্রমুখ।

জামায়াত এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে। সম্ভাব্য জোটের মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে। আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দলটি।

বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের নির্বাচনি সক্রিয়তা রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণে দেরি করে বা অংশগ্রহণ না করে। একইসঙ্গে নির্বাচনমুখী প্রস্তুতির এই গতিপ্রকৃতি দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের কৌশলগত অবস্থানকে স্পষ্ট করছে।