ইসরায়েলের কৌশলগত স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) রবিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’-এর সফল বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, “সন্ত্রাসী জায়নিস্ট শাসকগোষ্ঠীর আজকের বর্বরতা ও আগ্রাসনের জবাবে, যুদ্ধবিমান জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র ও জ্বালানি সরবরাহ স্থাপনাগুলোর ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বিত হামলা চালানো হয়েছে।”

শনিবার গভীর রাতে চালানো এই হামলা অধিকৃত ভূখণ্ডের গভীরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। ইরানের দাবি অনুযায়ী, এটি ছিল আত্মরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া, যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বৈধ।

আইআরজিসি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “শত্রুপক্ষ যদি তাদের আগ্রাসন অব্যাহত রাখে, তবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিরোধ আরও তীব্র ও ব্যাপক হবে।”

এদিকে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। আইআরজিসির বিবৃতিতে জানানো হয়, তাদের অ্যারোস্পেস ফোর্স দেশের সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ছোড়া ৩টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ১০টি ড্রোন এবং ডজনখানেক মাইক্রো-ড্রোন সফলভাবে প্রতিহত ও ধ্বংস করেছে।

এই সাম্প্রতিক অভিযানটি আসে শুক্রবার ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায়, যেখানে ইরানি বেসামরিক নাগরিক, সরকারি কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞানীদের শহীদ করা হয়।

ইরান প্রথম দফায় শুক্রবার রাতেই তেলআবিব ও আশপাশের এলাকায় অবস্থিত ১৫০টির বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

পরদিন শনিবারের হামলায় উত্তরাঞ্চলীয় অধিকৃত এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে, এবং হাইফায় বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুন ও ধোঁয়ার ভয়াবহ দৃশ্য ধরা পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে।

ইসরায়েলি সরকার এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও, হিব্রু ভাষার গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, সর্বশেষ হামলায় কমপক্ষে ৪ জন বসতি স্থাপনকারী নিহত হয়েছেন, যা ইসরায়েলি সেন্সরশিপ নীতিকে চ্যালেঞ্জ করছে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব আরও সরাসরি ও তীব্র সামরিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

ইরান জোর দিয়ে বলছে, তাদের সামরিক প্রতিক্রিয়া জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে বিবেচ্য, এবং তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েলের বারংবার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সার্বভৌমত্ব হরণের ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য।সূত্র: তেহরান টাইমস

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক