যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

চারদিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে শনিবার (১৪ জুন) সকালে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। খবরটি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

ড. ইউনূসের এ সফরকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলমান রাজনৈতিক সংকট এবং নির্বাচনপূর্ব সংলাপের প্রেক্ষাপটে এই সফর ছিল এক ধরনের ‘সফট ডিপ্লোমেসি’র অংশ, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগাভাগি করার পাশাপাশি সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।

লন্ডনে অবস্থানকালে ড. ইউনূস বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি ব্রিটিশ রাজপরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেন, যা বৈশ্বিক শান্তি, সামাজিক সংহতি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়। এ ছাড়া, তিনি লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন।

ড. ইউনূসের সফরসূচিতে আরও ছিল একাধিক কূটনৈতিক বৈঠক, যেখানে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য এবং মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। এসব বৈঠকে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের অবহিত করেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ড. ইউনূস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে লন্ডনের হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। দীর্ঘ বিমানযাত্রা শেষে শনিবার সকালে তিনি ঢাকায় অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীরা।

ড. ইউনূসের দেশে ফেরা একটি কৌশলগত মুহূর্তে ঘটল, যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনী বিতর্ক তুঙ্গে। তার বিদেশ সফর যেমন বিদেশি সমর্থন এবং আস্থা অর্জনে সহায়ক হয়েছে, দেশে ফেরা তেমনি ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনা এবং জাতীয় সংলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক