তুরস্ক থেকে ৪৮ যুদ্ধবিমান নিচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে একটি যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা চুক্তিতে পৌঁছেছে তুরস্ক। চুক্তির আওতায় তুরস্ক দেশীয়ভাবে নির্মিত ৪৮টি “কান” (KAAN) পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি করবে। গত ১১ জুন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই চুক্তির ঘোষণা দেন। খবর দিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

তুরস্কের জাতীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই যুদ্ধবিমানগুলোর মাধ্যমে এটি হবে দেশের প্রথম বড় রপ্তানিমূলক বিমানচুক্তি। যদিও এখনো “কান” যুদ্ধবিমান বিভিন্ন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, তবুও এর আন্তর্জাতিক চাহিদা বাড়ছে।

এরদোয়ান এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানান, এই বিমানগুলো তুরস্কে তৈরি করে ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি করা হবে এবং ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় প্রযুক্তি ও উৎপাদন ক্ষমতার সঙ্গে একীভূত করাও হবে। এই চুক্তি শুধু দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতেই নয়, প্রযুক্তিগত সহযোগিতার দিক থেকেও একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে এরদোয়ান এই চুক্তির আর্থিক দিক নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

তুরস্কের সরকারি সংবাদপত্র সাবাহ জানিয়েছে, এই চুক্তি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ‘ইন্দো ডিফেন্স ২০২৫’ প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীর সময় স্বাক্ষরিত হয়।

তুরস্কের তৈরি “কান” যুদ্ধবিমানটি ২০২৪ সালে প্রথম সফলভাবে আকাশে উড্ডয়ন করে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় এর প্রথম ইউনিট সরবরাহ করা হবে বলে জানা গেছে।

এই চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক-ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার হলো। এর আগে চলতি বছরের শুরুতেই দুই দেশ একটি বেকার যুদ্ধ ড্রোন কারখানায় যৌথ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়, যা ইন্দোনেশিয়ায় স্থাপিত হবে।

তুরস্ক এর আগেও পাকিস্তান এবং আজারবাইজানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এই দুই দেশও “কান” যুদ্ধবিমান ক্রয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে তুর্কি প্রতিরক্ষা সূত্রে জানা গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি মুসলিম বিশ্বের ভেতরে প্রতিরক্ষা খাতের আত্মনির্ভরতা ও সহযোগিতার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। বিশেষ করে যখন পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সামরিক নির্ভরতা কমাতে চায় অনেক দেশ, তখন তুরস্কের মতো উদীয়মান প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নির্মাতা দেশগুলোর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।