মব সহিংসতার শিকার ঢাবি শিক্ষার্থী, করল আত্মহনন

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ (১৮-১৯ সেশন) আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে দক্ষিণ জামশা গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের 'নাস্তিক' আখ্যা, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়া ও অনলাইন মব-সহিংসতার শিকার হয়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ ও সহপাঠীদের বরাতে জানা যায়, প্রায় আট মাস আগে ফেসবুকে ইসলাম বিষয়ক একটি মন্তব্য করেছিলেন শাকিল, যা পরে ভুল বুঝতে পেরে মুছে ফেলেন। দীর্ঘ সময় পর ৯ জুন রাতে ওই মন্তব্য নতুন করে প্রচার করা হলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শাকিলকে ‘নাস্তিক’ বলে আখ্যায়িত করে তাকে সামাজিকভাবে বয়কট ও বিচার চাওয়ার দাবি ওঠে।

আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শাকিল লেখেন, “আমি নাস্তিক নই... আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে আমি কোনো কটূক্তি করিনি। আজ আমি আমার আপন মানুষের কাছে সম্মান হারিয়েছি…”।

এ ঘটনায় সামাজিক সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, এটি ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে প্ররোচিত একটি ‘সাংগঠনিক অনলাইন মব সহিংসতার’ উদাহরণ। ছাত্রফ্রন্ট দাবি জানিয়েছে, ঘটনায় যারা উস্কানি ও মব তৈরিতে জড়িত ছিল তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক আকাশ আলী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “শাকিল বারবার ক্ষমা চেয়েও মবের রোষ থেকে রেহাই পাননি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রের নিষ্ক্রিয়তাই শাকিলের মৃত্যুর জন্য দায়ী।”

সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম জানান, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে এবং একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক