রোজা, পরীক্ষা ও বাজেটের মাঝে নির্বাচন অযৌক্তিক: বিএনপি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিলেও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তাঁর দীর্ঘ ভাষণে সরকারের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছেন। তবে নির্বাচন সংক্রান্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশার জায়গাটিতে তিনি হতাশ করেছেন।” তিনি অভিযোগ করেন, দেশের পঞ্চাশটিরও বেশি রাজনৈতিক দল বহুদিন ধরেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিএনপিও যৌক্তিকভাবে আবহাওয়া, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, রমজান মাস, বাজেট প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি করে আসছিল। কিন্তু এসব যৌক্তিকতা আমলে না নিয়ে ড. ইউনূস একটি অযৌক্তিক সময়কে নির্বাচন আয়োজনের জন্য বেছে নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন আয়োজনের জন্য এমন একটি সময় ঘোষণা করেছেন, যার সঙ্গে বাস্তবতা ও জনগণের স্বার্থের কোনো মিল নেই। এপ্রিলের প্রথমার্ধে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে তফসিল ঘোষণার পর ৪৫ দিন প্রচারের সময় দিতে হলে রমজান মাসে প্রচার চালাতে হবে। এটি অমানবিক ও অযৌক্তিক।” তিনি অভিযোগ করেন, এই সময়কালের আবহাওয়াও অনুকূল নয় এবং বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার সময়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠবে।

সালাহউদ্দিন বলেন, “সার্বিক দিক বিবেচনায় যদি খুব বেশি দেরি করতেই হতো, তাহলে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা যেত। তবেই তা গ্রহণযোগ্য হতে পারত দেশের রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে।” তিনি আরও সতর্ক করেন, এপ্রিলের সময় নির্ধারণ শুধু নির্বাচনের প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে না, বরং নির্বাচনের পরবর্তী সময়ের প্রশাসনিক বাস্তবতা, যেমন বাজেট প্রণয়ন, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও জটিলতা তৈরি করতে পারে।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, দলটি বিষয়টি নিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা করবে এবং যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। তিনি বলেন, “আমাদের সামনে যে বাস্তবতা, তা শুধু বিএনপির একার নয়, পুরো দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই বিষয়টিকে দলীয় সীমার বাইরে নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে ভাবতে হবে।”