পুতিনের সাথে বৈঠকের আগে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জেলেনস্কির

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সরাসরি বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার প্রস্তাব—উভয়পক্ষ যেন নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, অন্তত সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের পূর্বে।

তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইউক্রইনফর্ম সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৪ জুন) এক বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ার প্রতিনিধিরা জানিয়েছে যুদ্ধবিরতি এখন দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বিষয়। সেহেতু আমরা এখন একটি নেতৃস্থানীয় বৈঠকের আগে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিচ্ছি।”

তিনি জানান, ইউক্রেন ইস্তাম্বুল, সুইজারল্যান্ড বা ভ্যাটিকানে পুতিনের সঙ্গে যেকোনো দিন আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

জেলেনস্কি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ইউক্রেনের এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক অংশীদাররা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক এবং ইইউ, সমর্থন জানাবে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রস্তাব সমর্থন করলে, তা অত্যন্ত সহায়ক হবে।” একইসঙ্গে তিনি জানান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান চারপক্ষীয় আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন—যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, রাশিয়া এবং তুরস্ককে নিয়ে।

জেলেনস্কি স্পষ্ট করেন, তিনি এমনকি যুদ্ধবিরতি ছাড়াও পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে রাজি, তবে সেটি অর্থবহ এবং শান্তি-অভিমুখী হতে হবে। তিনি সতর্ক করেন, “যদি বৈঠক ব্যর্থ হয়, রাশিয়া একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে দিতে পারে। তবে আলোচনায় অগ্রগতি হলে, যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ ও মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব।”

এর আগে ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বিতীয় দফা শান্তি আলোচনা হয়েছে ২ জুন। প্রথম দফা হয়েছিল ১৬ মে। দ্বিতীয় দফায় বন্দি বিনিময় এবং নিহত সেনাদের মরদেহ প্রত্যাবর্তন বিষয়ে অগ্রগতি হয়। উভয়পক্ষ ৬ হাজার করে সেনার মরদেহ বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। এছাড়া ৫০০ করে বন্দি হস্তান্তরের কথাও বলা হয়েছে।

তবে জেলেনস্কি রাশিয়ার দেয়া খসড়া চুক্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তার মতে, “চুক্তির ভাষা ও মনোভাব ছিল একতরফা ও চাপিয়ে দেওয়ার মতো।” তিনি বলেন, “এটা কোনও সমঝোতা নয়, বরং আল্টিমেটাম।”

জেলেনস্কি তৃতীয় দফা আলোচনার জন্য শর্ত দেন, তা হতে হবে “পারস্পরিক সম্মান ও বাস্তবসম্মত শর্তের ভিত্তিতে।” তিনি বিশ্বাস করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সংকট সমাধান সম্ভব, তবে জবরদস্তিমূলক ভাষা বা একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নয়।