পাকিস্তানে সেনা অভিযানে নিহত ১৪ সন্ত্রাসী, ভারতীয় মদতের অভিযোগ

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্যের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ১৪ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, নিহত এসব সন্ত্রাসী ‘ভারতীয় মদতপুষ্ট’।

বুধবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের দাত্তা খেল এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়। আইএসপিআরের ভাষায়, “ভারত পাকিস্তানে প্রক্সি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক অভিযানে ১৪ জন ভারতীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ সমূলে উচ্ছেদের আগ পর্যন্ত সেনা-পুলিশের এই যৌথ অভিযান চলবে। সেনা অভিযানের পর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দপ্তর থেকেও একটি বিবৃতি আসে। এতে বলা হয়, যারা সন্ত্রাসবাদের সমর্থক এবং মানবতার শত্রু— তাদের এভাবেই ধ্বংস করা হবে।

এর আগে পাঁচ দিন আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানের কাছি জেলায় আরেক অভিযানে পাঁচ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যা করেছিল সেনা-পুলিশ। তখনও আইএসপিআর জানিয়েছিল, নিহতরা ভারতের মদতপুষ্ট।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের চারটি রাজ্য ও তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান— এই দুটি অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে তৎপর রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।

টিটিপি ও বিএলএ— উভয়েরই লক্ষ্য পাকিস্তান থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করা।

২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ওই বছরে ৪৪টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।২০২৪ সালের হামলাগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা ও ৯২৭ জন বেসামরিক নাগরিক। বিপরীতে সেনা-পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।