শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে আসামি করলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে নিজের গুমের ঘটনায় অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) তিনি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।

অভিযোগ জমা দেওয়ার পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “এই মামলা অনেক আগেই করা উচিত ছিল, তবে বিভিন্ন ধরনের ব্যস্ততা ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে কিছুটা সময় লেগেছে। যে কাজটা কয়েক মাস আগে করতে পারতাম, সেটা আজ এসে শেষ করলাম।”

সালাহউদ্দিন জানান, অভিযোগে প্রাথমিকভাবে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও র‌্যাব ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন। তিনি বলেন, “এগুলো প্রাথমিক তালিকা। তদন্তের মাধ্যমে আরও অনেকের নাম সামনে আসবে যাদের এখন শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “গুম, খুন ও নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যারা এই মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রীসহ গুমে জড়িত সকলের বিচার চাই।”

এর আগে গত বছরের ১৫ অক্টোবর সালাহউদ্দিন আহমেদ একই অভিযোগ গুমসংক্রান্ত কমিশনের কাছেও জমা দেন। তিনি বলেন, “যারা এ পর্যন্ত গুমে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আর যারা পালিয়ে আছেন, কমিশনের উচিত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা।”

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হন। প্রায় দুই মাস পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। ভারত সরকারের অভিযোগ ছিল, তিনি বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন। এ ঘটনায় ভারতের ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা হয় এবং ২০১৮ সালে ভারতের একটি আদালত তাকে খালাস দেয়। তবে সরকারের আপিলের কারণে সালাহউদ্দিনকে দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করতে হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে তাকে বাংলাদেশ থেকেই জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আজকের আইনি পদক্ষেপ সেই ধারাবাহিকতাতেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।