জাপান-বাংলাদেশের যৌথ বিবৃতি

বাংলাদেশে চলমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। টোকিওতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সমর্থনের কথা জানান তিনি।

বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথভাবে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, উক্ত বৈঠকে উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীরতর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বৈঠকে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যে জাতি গঠনমূলক উদ্যোগ ও সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাকে ‘বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপরিহার্য’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী ইশিবা।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু স্থিতিশীলতা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হয়। এর মধ্যে রয়েছে ‘অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিশীলতা জোরদারকরণে উন্নয়ন নীতিগত ঋণ’ এবং ‘জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প (পর্ব-১)’। উভয় পক্ষই এই চুক্তিগুলোকে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখছেন।

আলোচনায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও জাতিসংঘ সনদের নীতিসমূহের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন দুই নেতা। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বহুপক্ষীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি টেকসই বৈশ্বিক কাঠামো গড়ে তোলার উপরও জোর দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও বৈঠকে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়। জাপানের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করা হয় এবং ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাপানের অব্যাহত সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাপানের উদার সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বৈঠকের শেষে প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান অধ্যাপক ইউনূস, যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও একধাপ এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগ দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক