জাপানি শিশুদের হেফাজতে চূড়ান্ত লড়াই, শুনানি ২২ জুলাই

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ এবং জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো দম্পতির দুই কন্যা জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা এর হেফাজত সংক্রান্ত মামলার আপিল শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আগামী ২২ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন।

আদালতে এরিকোর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এবং ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।

পেছনের প্রেক্ষাপটএই জটিল পারিবারিক বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দম্পতির দুই কন্যা বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা ও ছোট মেয়ে লাইলা লিনা। হাইকোর্ট ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারির রায়ে উল্লেখ করেন, “বিশেষ পরিস্থিতি” বিবেচনায় জেসমিন মায়ের (এরিকো) হেফাজতে এবং লিনা বাবার (ইমরান) হেফাজতে থাকবে। রায়ে আরও বলা হয়, উভয় অভিভাবকই সন্তানদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সন্তানের পূর্ণ হেফাজতের দাবিতে উভয় পক্ষই আপিল করেন। মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকা অবস্থায়, ২০২৩ সালের ৯ এপ্রিল বড় মেয়ে জেসমিনকে নিয়ে জাপানে ফিরে যান এরিকো। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইমরান শরীফ আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন। এরিকো পরে ১০ জুলাই আদালতে হাজির হতে বাংলাদেশে ফেরত আসেন।

বর্তমানে বড় মেয়ে জেসমিন রয়েছেন জাপানে মায়ের সঙ্গে, আর ছোট মেয়ে লিনা রয়েছেন বাংলাদেশে বাবার সঙ্গে। এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি শিশুদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে বলে আইনজীবীরা আদালতের নজরে আনেন।

এই মামলা শুধুমাত্র আইনি জটিলতা নয়, বরং আন্তঃদেশীয় পরিবারিক বন্ধন, সন্তানের সর্বোত্তম স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্যতার স্পষ্ট প্রতিফলন। শিশুদের মানসিক সুস্থতা, পারিবারিক স্থিতিশীলতা এবং সন্তানের সর্বোত্তম কল্যাণকে কেন্দ্র করেই সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

চূড়ান্ত শুনানির দিন নির্ধারণের মাধ্যমে আদালত একটি আন্তর্জাতিক পরিসরে নজরকাড়া পারিবারিক বিরোধের নিষ্পত্তির পথে এগোচ্ছে। আগামী ২২ জুলাই আপিল বিভাগের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সংশ্লিষ্ট পক্ষ, শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং দুটি দেশের আইনি পরিমণ্ডল।