ইরান-গাজা নিয়ে ইতিবাচক বার্তা ট্রাম্পের

গাজা পরিস্থিতি ও ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে ঘিরে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এক নতুন কূটনৈতিক আশার আভাস দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার (২৫ মে) নিউ জার্সি থেকে এয়ার ফোর্স ওয়নে ওঠার আগে সাংবাদিকদের তিনি জানান, গাজা ও ইরান ইস্যুতে নিকট ভবিষ্যতে ইতিবাচক অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, "আমার ধারণা, ইরান সম্পর্কিত কিছু ভালো খবর আমরা পেতে পারি। গাজা ও হামাস সংক্রান্ত দিকেও দৃষ্টি রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন এই সংঘাত থামানো যায়। ইসরায়েলের সঙ্গেও এ বিষয়ে আমাদের কথোপকথন চলছে।"

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মহলে বেড়েছে উদ্বেগ ও ক্ষোভ।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বিমান হামলায় রোববার একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া অবস্থায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। হতাহতদের মধ্যে রেড ক্রসের কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং কয়েকজন শিশু রয়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের মতে, আশ্রয়কেন্দ্র ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, গাজায় অন্তত ৭০ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। গত সপ্তাহে চার বছর বয়সী শিশু মোহাম্মদ ইয়াসিনের মৃত্যু দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে এই সংকটের ভয়াবহতার।

ইসরায়েলি বাহিনী গত বুধবার থেকে মাত্র ১০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে গাজায়, যেখানে হাজার হাজার মানুষ খাদ্য, ওষুধ ও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর। সংস্থাগুলোর মতে, এ সরবরাহ প্রয়োজনের এক ক্ষুদ্রাংশ মাত্র।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, সংঘাত শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৫৩,৯৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২২,৭৯৭ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদমাধ্যমের দাবি, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। কারণ এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আশাব্যঞ্জক বক্তব্য বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা দৃশ্যমান নয়, তবে তাঁর বক্তব্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজরকে নতুনভাবে কেন্দ্রীভূত করেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই জটিল সংকটের সম্ভাব্য কূটনৈতিক সমাধানের দিকে।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজা ও ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র যদি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তবে দীর্ঘদিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে একটা গঠনমূলক পরিবর্তন সম্ভব।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক