পাক-ভারত সংঘাতের শঙ্কা, পারমাণবিক তৎপরতা তুঙ্গে: মার্কিন বার্তা

ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে পাকিস্তান এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)। সংস্থাটির সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পারসেপশনের প্রেক্ষিতে পাকিস্তান ব্যাপকহারে সামরিক আধুনিকায়ন ও পারমাণবিক শক্তি বিস্তারে মনোযোগ দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তান তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণ ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়েছে। দেশটি বিদেশি উৎস থেকে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের উপাদান সংগ্রহ করে তার সামরিক শক্তি বাড়ানোর চেষ্টায় আছে।

ডিআইএ এই মূল্যায়নের সময় সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা-পরবর্তী ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রসঙ্গও তোলে। এমন হামলাগুলোর পরিণতিতে দু’দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে সীমান্ত সংঘর্ষ ও সংঘাতময় কূটনৈতিক পরিবেশের ঝুঁকি তৈরি করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তানের পরমাণু নীতিতে "প্রতিরক্ষামূলক আধুনিকায়ন ও কৌশলগত প্রস্তুতির মনোভাব" বোঝা যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাকিস্তান চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। দুই দেশ নিয়মিত যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনা করে, যা আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে প্রভাব ফেলছে। তবে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (CPEC) প্রকল্পে সন্ত্রাসী হামলার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করে ডিআইএ।

প্রতিবেদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, চীনের সামরিক উপস্থিতি শুধু দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়াতেই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন বাংলাদেশেও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিস্তৃতি কৌশলগতভাবে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারের অংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।

ডিআইএ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ভবিষ্যতেও পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে সহিংস সংঘর্ষ, সীমান্ত উত্তেজনা ও সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত উদ্বেগ তীব্রতর হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে পাকিস্তান তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিশেষত পরমাণু সক্ষমতা উন্নত করতে আরও অগ্রাধিকার দেবে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক