এক রাতেই ধ্বংস ৪৫ ক্ষেপণাস্ত্র, ২৬৬ ড্রোন

ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা দ্বিতীয় দিনের রাতভর আকাশপথে আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন। এএফপির বরাতে জানা যায়, শনিবার ও রোববার (২৪ ও ২৫ মে) দেশজুড়ে চালানো এই হামলায় রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সাহায্যে কিয়েভসহ একাধিক শহর লক্ষ্য করে তীব্র বোমাবর্ষণ চালায়।

রোববার সকালে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, মাত্র এক রাতেই তারা ৪৫টি রুশ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২৬৬টি ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। বিমান বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, ২২টি অঞ্চলে বিমান হামলার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে এবং অন্তত ১৫টি স্থানে আকাশ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে।

এই সময়ের মধ্যেই এক ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবন্দি বিনিময় সম্পন্ন হয়। ইউক্রেন ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার ৩০৭ জন করে বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর একদিন আগেও ৩৯০ জন বন্দির বিনিময় হয়েছিল। চলমান যুদ্ধের মধ্যে এটিই দুই দেশের মধ্যে অন্যতম বড় বন্দি অদল-বদল।

তবে বন্দি বিনিময়ের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই কিয়েভে চালানো রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তৈমুর তাকাচেঙ্কো জানান, রাজধানীর হলোসিভস্কি জেলায় একটি পাঁচতলা ভবনে ড্রোন আঘাত হানলে আগুন লেগে যায়। এর ফলে ভবনের বাইরের অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক ভবন ও একটি ব্যক্তিগত গাড়িও ধ্বংস হয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, কিয়েভ ছাড়াও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, দক্ষিণাঞ্চলের মাইকোলাইভ এবং পশ্চিমাঞ্চলের টেরনোপিল শহরেও রুশ বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। রাজধানীর বাইরে দুটি ছোট শহরে তিনজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

একদিকে রাশিয়ার আগ্রাসন, অন্যদিকে ইউক্রেনের শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও কৌশলগত অদলবদল—দুই দেশের যুদ্ধ এখন এক জটিল ভারসাম্যের পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুদ্ধের এই নতুন ঢেউ কেবল সামরিক ব্যবস্থাকে নয়, মানবিক পরিণতিতেও তীব্র প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

- ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক